কুষ্টিয়ায় অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বিশ^াস ভঙ্গ করে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ের হিসাবপত্র বিকৃত করার দায়ে হাফিজুর রহমান (৫৫) নামে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক দৌলতপুর শাখার অবসরপ্রাপ্ত পরিদর্শককে ৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ডসহ ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৯ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) বিকাল ৪টায় কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম আসামীর উপস্থিতিতে এ রায় দেন। সাজাপ্রাপ্ত হাফিজুর রহমান দৌলতপুর উপজেলার কৈপাল গ্রামের বাসিন্দা মৃত আসগর আলীর ছেলে। তিনি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক দৌলতপুর উপজেলার তারাগুনিয়া শাখায় পরিদর্শক পদে কর্মরত ছিলেন।
হাফিজুর রহমান ব্যাংক অর্পিত দায়িত্ব পালনকালে পেনাল কোডের ৪০৯ ধারায় অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গ করার অপরাধ ও ৪৭৭ (এ) হিসাবপত্র বিকৃত করার অপরাধে এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অপরাধমূলক অসদাচরণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাকে বিজ্ঞ আদালত এই সাজা দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন দুদক কুষ্টিয়ার কৌঁসুলি এ্যাড. আল মুজাহিদ হোসেন। আনীত অভিযোগ আদালতের কাছে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে বলে বিচারক তার রায়ে উলেখ করেছেন।
দুদক ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৪ সালের ৯ আগস্ট হইতে ২০০৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এবং ২০১৩ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হইতে ২০১৪ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত হাফিজুর রহমান কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার তারাগুনিয়া শাখায় কৃষি ব্যাংকের পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এসময় দায়িত্ব পালনকালে তিনি বিভিন্ন ঋণ গ্রহীতার নিকট হতে আয় ও রশিদ এর মাধ্যমে আদায়কৃত টাকার মধ্যে ১৫টি আয় ও রশিদে নিজে স্বাক্ষর করে ৯ লাখ ৭৮ হাজার ৪৯৫ টাকা আদায় করেন। তৎকালীন সময়ে ওই ব্যাংকে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিকট ওই টাকা হস্তান্তর না করে অবৈধভাবে নিজেই আত্মসাৎ করেন।
এঘটনায় ২০১৬ সালের ২২ নভেম্বরে সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুষ্টিয়ার উপ-পরিচালক আব্দুল গাফফার বাদি হয়ে ব্যাংক হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে আদালতে চার্যশীট দেয় দুদক। মামলাটি দীর্ঘ স্বাক্ষ্য শুনানী শেষে সাবেক ওই ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীত প্রমানিত হওয়ায় এই রায় দিয়েছেন বলে জানান দুদক কৌঁসুলি আল মুজাহিদ মিঠু।