নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় আওয়ামী লীগের বিবদমান দুটি গ্রুপের সংঘর্ষ, গুলি বিনিময়, হামলা ও ২ দফা ১৪৪ ধারা জারির পর কোম্পানীগঞ্জ এখন শান্ত ও স্বাভাবিক। কিন্তু, জটলা শুরু হয়েছে আদালতে। এক পক্ষ অপর পক্ষের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করেছে। সোমবার (১৫ মার্চ) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে প্রধান ও ৯৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৫০/৬০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলায় মির্জার ভাই শাহাদাত হোসেনকে দ্বিতীয় ও ছেলে মির্জা মাশরুর কাদের ওরফে তাশিক কাদেরকে তৃতীয় আসামি করা হয়েছে। চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪ নম্বর আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খানের স্ত্রী আরজুমান পারভীন। মামলার শুনানি শেষে বিজ্ঞ বিচারক এস এম মোসলেহ উদ্দিন মিজান আদেশ দেন, এ মামলা নেওয়ার এখতিয়ার এ আদালতের নেই। তাই মামলাটি বিচারক শোয়েব উদ্দিন খান এর আদালতে পাঠান।
মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) মামলাটির শুনানি হবে বলে জানান আরজুমান পারভীন এর আইনজীবী অ্যাডভোকেট হারুন অর রশিদ হাওলাদার। তিনি আরও জানান, মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও তার লোকজন ৮ মার্চ সন্ধ্যায় কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে মারধর করে। এসময় হামলাকারীরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক তৈরি করে। এ ঘটনায় মামলার বাদী আরজুমান পারভীন কোম্পানীগঞ্জ থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। এ কারণে আদালতে মামলাটি দায়ের করেন আরজুমান পারভীন।
এদিকে, একই দিনে নোয়াখালীর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মোসলেহ উদ্দিন মিজানের আদালতে উপজেলার চাপরাশিরহাট বাজারে আওয়ামী লীগের দুগ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় মির্জা কাদেরের অনুসারী উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি সালাউদ্দিন পিটন বাদী হয়ে মিজানুর রহমান বাদলকে প্রধান আসামি করে ১০৫ জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাত ১৫০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ বিচারক শুনানি শেষে, মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন বলে নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শংকর চন্দ্র ভৌমিক।
এছাড়া রোববার (১৪ মার্চ) একই আদালতে আবদুল কাদের মির্জাসহ ১৬৪ জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাত ৫০/৬০ জনকে আসামি করে আলাউদ্দিন হত্যার ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করেন নিহতের ছোট ভাই মো. এমদাদ হোসেন। পরে শুনানি শেষে এই হত্যার ঘটনায় কোম্পানীগঞ্জ থানায় কোনো মামলা হয়েছে কিনা তা আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে আদালতকে অবহিত করতে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহিদুল হক রনিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।