২০২২ অর্থবছরেই ভারতের চতুর্থ বৃহত্তম রপ্তানি অংশীদার হয়ে উঠতে পারে বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে পাওয়া তথ্যে এমনটাই সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। আর সেটি হলে যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও চীনের পরেই ভারতের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশের নাম উচ্চারিত হবে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির হাত ধরে বৃহত্তম প্রতিবেশী দেশ থেকে আমদানি বাড়ায় এই মাইলফলক তৈরি হতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ভারতে কোনো বছরের ১ এপ্রিল থেকে পরের বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত এক অর্থবছর ধরা হয়। ২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ছিল ২০২০-২১ অর্থবছর। সমাপ্তির বছর বিবেচনায় এটিকে অনেক ক্ষেত্রে ২০২১ অর্থবছরও বলা হয়।
ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যের সূত্রে স্থানীয় দৈনিক বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২২ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় বাংলাদেশে ভারতের পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ৮১ শতাংশ। গত এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে ৭৭০ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে ভারত। এর ফলে এই সাত মাসে ভারতের বৃহত্তম রপ্তানি অংশীদার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র, আমিরাত ও চীনের পরেই জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ।
চলতি অর্থবছরের বাকি সময়জুড়ে এই ধারা অব্যাহত থাকলে ভারতের বৃহত্তম রপ্তানি অংশীদারের তালিকায় দুই বছরে পাঁচ ধাপ উন্নতি হবে বাংলাদেশের। এই তালিকায় ২০২০ অর্থবছরে নয় নম্বর ছিল বাংলাদেশ। তবে গত অর্থবছরে সবাইকে অবাক করে একলাফে পাঁচে উঠে আসে তারা। ২০২২ অর্থবছরে এবার সেটিকেও ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
গত এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি হয়েছে অবিশ্বাস্য। এসময় নাগরিক সেবার অনেক সূচকের পাশাপাশি মাথাপিছু আয়ে ভারতকেও ছাড়িয়ে গেছে দেশটি। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে সবচেয়ে বড় অবদান তৈরি পোশাক খাতের। দেশের মোট রপ্তানির ৮০ ভাগই আসে এই একটি খাত থেকে। এছাড়া, বাংলাদেশের মোট জিডিপিতে প্রবাসী আয়ের অবদান অন্তত ছয় শতাংশ।
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আরও বাড়াতে বর্তমানে একটি সর্বাঙ্গীণ অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (সিইপিএ) করার বিষয়ে যৌথ সমীক্ষা চালাচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারত। বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নীতিগত পরামর্শ এবং ব্যবসায়িক সম্প্রদায়ের মধ্যে যোগাযোগের সুবিধার্থে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে গঠন করা হয় বাংলাদেশ-ভারত সিইও ফোরাম। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে শিগগিরই এই ফোরাম আবারও বৈঠকে বসবে বলে জানা গেছে।