দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের নেতা ও শান্তিতে নোবেলজয়ী আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা টুটুর মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নেলসন ম্যান্ডেলা ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের নেতাদের মধ্যে যে কজন বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পেয়েছেন, টুটু তাদের একজন। বিংশ শতাব্দীর শেষদিকে কেপটাউনে আর্চ বিশপ হিসাবে দায়িত্ব পালনকারী টুটু দক্ষিণ আফ্রিকার নিগৃহীত সমাজে জাতিগত বিদ্বেষ কমানোর ক্ষেত্রে অনুকরণীয় ভূমিকা পালন করেন।
বর্ণবৈষম্যের প্রথা বিলুপ্ত করার সংগ্রামে ভূমিকা রাখার জন্য ১৯৮৪ সালে ডেসমন্ড টুটুকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। টুটু ছিলেন দেশ-বিদেশের অন্যতম পরিচিত ব্যক্তিত্ব। দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার সমসাময়িক ছিলেন ডেসমন্ড টুটু। বর্ণভিত্তিক বিভাজনের নীতির অবসান ঘটানোর আন্দোলনের পেছনের অন্যতম চালিকাশক্তি ছিলেন তিনি।
টুটুর মৃত্যুর খবর জানিয়ে রোববার দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাপোসা এক বিবৃতিতে বলেছেন, আর্চবিশপ টুটু নতুন প্রজন্মের হাতে ‘স্বাধীন দক্ষিণ আফ্রিকা’ তুলে দিতে সাহায্য করেছিলেন। তার মৃত্যুতে একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল। তাকে ‘আইকনিক আধ্যাত্মিক নেতা, বর্ণবাদবিরোধী কর্মী ও বৈশ্বিক মানবাধিকার আন্দোলনের সৈনিক’ হিসাবে বর্ণনা করে প্রেসিডেন্ট রামাপোসা তার শোকবার্তায় বলেছেন, ‘তিনি ছিলেন অতুলনীয় এক দেশপ্রেমিক।’ টুটুকে একজন নীতিমান ও বাস্তববাদী নেতা হিসাবে বর্ণনা করেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট। সিরিল রামাফোসা বলেন, বর্ণবাদের শক্তির বিরুদ্ধে অসাধারণ বুদ্ধি, সততা ও অপরাজেয় একজন মানুষ ছিলেন টুটু।
এক বিবৃতিতে আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু আইপি ট্রাস্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান এবং আর্চবিশপের কার্যালয়ের সমন্বয়ক ড. রামফেলা মামফেলে জানান, রোববার সকালে কেপটাউনের ওয়েসিস ফ্রেইল কেয়ার সেন্টারে মারা যান ডেসমন্ড টুটু। দক্ষিণ আফ্রিকার ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশনের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করা টুটুর ১৯৯৭ সালে প্রোস্টেট ক্যানসার ধরা পড়ে। ক্যানসার থেকে সৃষ্ট জটিলতার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডেসমন্ড টুটু ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি ট্রাস্টের মুখপাত্র রজার ফ্রিডম্যান।