প্রেম করে বিয়ে। আড়াই মাস পার না হতেই যৌতুক হিসেবে মোটরসাইকেল, স্বর্ণের আংটি ও একটি মোবাইল ফোন দাবি করে জামাই ও তার পরিবারের সদস্যরা। অসহায় বাবার পক্ষে এখন এত টাকার জিনিস দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। তবে তা মানতে নারাজ জামাইয়ের পরিবার। এ নিয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বসে মীমাংসা করে দেন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে কনের বাবাসহ চারজনকে বেধড়ক পিটিয়েছে জামাইয়ের বাবাসহ তিন ভাই। সোমবার (২০ ডিসেম্বর) রাত ১২টার দিকে আহতদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি উপজেলার গড়াইটুপি ইউনিয়নের সরাবাড়িয়া গ্রামে ঘটে।
আহতরা হলেন- সরাবাড়িয়া গ্রামের বিশ্বাসপাড়ার মৃত আবু বকর মল্লিকের ছেলে আবু তাহের মল্লিক (৫৫), তার দুই ছেলে শরিফুল ইসলাম (২৫), বাবু (১৬) এবং কনের বাবা জীবননগর উপজেলার উথলী ইউনিয়নের সেনেরহুদা গ্রামের মাঝেরপাড়ার উম্মাদ আলীর ছেলে মধু মিয়া (৪৫)।
কনের বাবা মধু মিয়া বলেন, বছর খানেক আগে আমার মেয়ে কনার (১৬) সঙ্গে সরাবাড়িয়া গ্রামের বিশ্বাসপাড়ার আজিজুল মল্লিকের ছেলে শাওনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আড়াই মাস আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই জামাই ও তার পরিবারের সদস্যরা যৌতুক হিসেবে একটি মোটরসাইকেল, স্বর্ণের আংটি ও মোবাইল ফোন দাবি করে আসছে। আমি গরিব হওয়ায় তাদের দাবি মেনে নিতে পারেনি। এই নিয়ে মাঝেমধ্যেই আমার মেয়েকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার কথা বলে।
সোমবার বেয়াইন আমাকে ফোন দিয়ে যৌতুক বাবদ মোটরসাইকেল, আংটি ও মোবাইলের কথা আবারও বলেন। আমি অমত প্রকাশ করলে বিকেলে তারা আমার বাড়িতে চলে আসে। সন্ধ্যার দিকে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে উভয়পক্ষের সম্মতিতে যৌতুক না নেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। মীমাংসার পর শাওনের মা ময়না খাতুন গালিগালাজ শুরু করে। এতে উভয়পক্ষ বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এ সময় শাওনের বাবা আজিজুল ও তার তিন ভাই বাঁশ দিয়ে আমাদের বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম লুৎফুল কবীর বলেন, সরাবাড়িয়া গ্রামে যৌতুক সংক্রান্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শাকিল আরসালান ঢাকা পোস্টেকে বলেন, আবু তাহেদের মাথায় বেশ কয়েকটা সেলাই দেওয়া হয়েছে। তার অবস্থা শঙ্কামুক্ত কি না এখনই বলা যাচ্ছে না। ভর্তি রেখে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য বাইরে পাঠানো হতে পারে। তবে বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।