রাজধানীর পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে মুসলিম শিক্ষিকাদের হিজাব ব্যবহার না করতে নোটিশ দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তাদের শ্রেণিকক্ষে এবং প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হিজাব না পরতে বলা হয়েছে। গত ১৫ ডিসেম্বর নারী শিক্ষকদের এ নির্দেশনা দিয়ে নোটিশ দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ব্রাদার প্রদীপ প্লাসিড গোমেজ। তার স্বাক্ষরিত সেই নোটিশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ সব মহলের মানুষের প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে। ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেন্ট গ্রেগরিজ স্কুল এন্ড কলেজে সব মিলিয়ে ১৪০ জন মতো শিক্ষক রয়েছেন। তার মধ্যে মুসলিম নারী শিক্ষক ৯ জন। তার মধ্যে হিজাব পড়েন ৬ জন শিক্ষিকা। তারা নোটিশ দেয়ার পরেও হিজাব পড়ে প্রতিষ্ঠান আসেন বলে জানা গেছে। এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার মতো। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছে এই বিষয় এ জানতে চাইলে তারা বলেন, এই ধরনের সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই দেয়া উচিত না। গ্রেগরির মতো সুনামধন্য প্রতিষ্ঠানের কাছে এই ধরনের সিদ্ধান্ত আমরা কখনো আশা করিনি। যে যার ধর্ম পালন করার স্বাধীনতা রয়েছে। এই নোটিশ দিয়ে এক ধরনের ধর্ম বিদ্বেষী মনোভাব তৈরি করেছে। কর্তৃপক্ষের এসব সিদ্ধান্ত এর কারণে স্কুলের সুনাম নষ্ট হয়েছে বলে মনে করেন তারা।
নুসরাত ফেরদৌসী নামে একজন অভিভাবক বলেন, হিজাব একটা শালীন ড্রেস। এটা নিয়ে আদেশ-অনুরোধ এই ধরনের কোনো নোটিশ দেয়া ঠিক হয়নি। তিনি বলেন, দেশের ৯০ ভাগ মানুষ মুসলিম। মুসলিম নারীদের হিজাব নিষিদ্ধ করে কী বুঝাতে চেয়েছেন এটা আমার বোধগম্য নয়। এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা কোনভাবেই উচিত হয়নি বলে মনে করে তিনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ ব্রাদার প্রদীপ প্লাসিড গোমেজ যুগান্তরকে জানান, আমি ঘরোয়া পরিবেশে আমাদের প্রতিষ্ঠানে হিজাব না পরার জন্য একটা নোটিশ দিয়েছি। তবে বিষয়টি জোর করে নয় অত্যন্ত সহজ ও অনুরোধের ভাষায় বলা হয়েছে। আমাদের মিশনারি স্কুলের এক ধরনের পরিবেশ আছে। তাই সবাইকে এক ধরনের পোশাকে থাকার জন্য এই নোটিশ দেয়া হয়েছে।