বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য দেশের ভেতরে-বাইরে ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অযৌক্তিক সিদ্ধান্তে দেশের মানুষ হতাশ। নিষেধাজ্ঞার এই সিদ্ধান্ত নিতে দেশীয় (অপ) শক্তিও ভূমিকা রেখেছে।
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে “রাজনীতির ভিতর বাহির ও ষড়যন্ত্রের নিষেধাজ্ঞা’’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন। গোলটেবিল আলোচনা সভার আয়োজন করে যৌথভাবে বিবার্তা২৪ডটনেট ও জাগরণ টিভি।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, আন্তর্জাতিক নানা ষড়যন্ত্র থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ শূন্য থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে এখন বিশ্বের বুকে ‘রোল মডেল’। এমনকি ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, যা নস্যাৎ করতে দেশি-বিদেশি চক্র সক্রিয়ভাবে কাজ করছে এবং অপপ্রচার করছে। আমাদের এই অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এক্ষেত্রে গোয়েন্দা সংস্থা, দূতাবাসকে তৎপর হতে হবে। ভূ-রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার জন্য ফরেন সার্ভিসকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে।
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের আভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কথা বলছি না, মানবাধিকার নিয়ে কথা বলছি। যারা মানবাধিকারের সবক দিচ্ছে সেসব দেশ নিয়ে বিশ্বে প্রচুর লেখালেখি আছে। সারা পৃথিবীতে কিছুদিন আগে একটি স্লোগান ছড়িয়েছে ‘ব্ল্যাক লাইভস মেটার’। এই একটি স্লোগানেই বোঝা যায় যুক্তরাষ্ট্রে কতটা চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। তারা সিরিয়া, ইরান, ইরাকেও গণহত্যা করেছে। আমরা সেসব নিয়েও বলতে চাই না। আমরা জাতির পিতার সুযোগ্য উত্তরসূরির নেতৃত্বে সোনার বাংলা গড়তে চাই। ‘৭৫-এর হত্যাকাণ্ডের পর দেশ উল্টো ধারায় চলেছিল।
হানিফ বলেন, আমরা যে আদর্শ বুকে ধারণ করে নয় মাস যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম, সেই চার নীতির অন্যতম ছিল সমাজতন্ত্র। সংঘাত সেখান থেকেই শুরু। বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল। পশ্চিমা পুঁজিবাদী নীতির সঙ্গে মেলেনি। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যা করে যারা ক্ষমতায় আসলো তারা আত্মস্বীকৃত খুনিদের পুরস্কৃত করল। অনেকের দণ্ড কার্যকর হয়েছে, অনেকে বিদেশে পালিয়ে আছে। যে দেশ মানবাধিকারের উপদেশ, নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে বঙ্গবন্ধুর খুনিরা তাদেরই আশ্রয়ে আছে।
জাগরণ আইপি টিভির প্রধান সম্পাদক এফএম শাহীনের সঞ্চালনা ও বিবার্তা২৪ডটনেট সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন হাসির সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে কী-নোট উপস্থাপন করেন আইনজীবী ও গবেষক ব্যারিস্টার ফারজানা মাহমুদ। আলোচনায় আলোচক হিসেবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মশিউর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন, প্রজন্ম ৭১-এর সভাপতি আসিফ মুনির তন্ময়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিশিষ্টজন উপস্থিত ছিলেন।