রাষ্ট্রপ্রধানের পদ থেকে ব্রিটিশ রানি এলিজাবেথকে সরিয়ে দিতে যাচ্ছে বারবাডোজ। এর ফলে দেশটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে অবসান হতে যাচ্ছে প্রায় ৪শ বছরের ঔপনিবেশিক সম্পর্কের। আগামী সপ্তাহেই হেড অব স্টেট পদ থেকে রানি এলিজাবেথের নাম বাদ দেয়া হবে। সংসদীয় গণতান্ত্রিক দেশটির এই সিদ্ধান্ত, ব্রিটিশ প্রভাব থাকা অন্যান্য দেশগুলোকে উদ্বুদ্ধ করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ব্রিটেনের কাছ থেকে ১৯৬৬ সালে স্বাধীনতা লাভ করে বারবাডোজ। সংসদীয় গণতান্ত্রিক দেশটিতে, প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, গভর্নর জেনারেলের মতো পদ রয়েছে। তা সত্ত্বেও, হেড অব স্টেট বা রাষ্ট্রপ্রধানের পদে ছিল ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথের নাম। স্বাধীনতা লাভের প্রায় ৫৫ বছর পর শাসন ব্যবস্থায় এই পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বারবাডোজ। আগামী সপ্তাহে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রজাতন্ত্র হিসেবে আবির্ভূত হবে দেশটি।
বারবাডোজের এমন সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে লন্ডন কিংস কলেজের অধ্যাপক রিচার্ড ড্রাইটন বলেন, এটা পৃথিবীর বুকে নতুন একটি ইতিহাস হতে চলেছে। ব্রিটিশদের উপনিবেশিক শাসন যে কয়টি জায়গায় সবচেয়ে প্রবল ছিলো তার মধ্যে অন্যতম বারবাডোজ। বলা চলে, এই অঞ্চলটি দাস ব্যবসার অন্যতম কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। আফ্রিকা থেকে কৃষ্ণাঙ্গদের ধরে এনে ক্যারিবিয়ানসহ আশেপাশের অঞ্চলগুলোয় সরবরাহ করা হতো। তাই বারবাডোজের মানুষের মধ্যে এ নিয়ে ক্ষোভটাও বেশি।
১৬২৫ সালে একটি মাত্র জাহাজ প্রবেশের মধ্যে দিয়ে বারবাডোজে শুরু হয় ব্রিটিশ শাসন। আফ্রিকা থেকে কৃষ্ণাঙ্গ দাস এনে আখ চাষ করানোই ছিলো ব্রিটিশ ব্যবসায়ীদের লক্ষ্য। ২শ বছরের মাথায় ৬ লাখ আফ্রিকান দাসের ঠাঁই হয় বারবাডোজে। ওই অধ্যাপক মনে করছেন, এখনও যেসব স্বাধীন দেশে ব্রিটিশ রানির পদ রয়েছে সেসব দেশ বারবাডোজের পথ অনুসরণেই আগ্রহী হতে পারে। তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা কিংবা নিউজিল্যান্ড, এমন অনেক দেশ আছে যেখানে হেড অব স্টেটের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন ব্রিটিশ রানি। এসব দেশে অনেক দিন ধরেই আলোচিত হচ্ছে ব্রিটিশ প্রভাবমুক্ত হওয়ার বিষয়টি। বারবাডোজের আগে রাষ্ট্রপ্রধানের জায়গা থেকে রানি এলিজাবেথের নাম বাতিল করে মরিশাস। সেটিও প্রায় ৩০ বছর আগে।