দাম কমাতে নিজেদের মজুত থেকে ৫ কোটি ব্যারেল তেল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার বাইডেন এক ঘোষণায় বলেন, এসপিআর থেকে আগামী কয়েক মাসে পাঁচ কোটি ব্যারেল তেল বাজারে ছাড়া হবে। যুদ্ধ-বিগ্রহ, জাতীয় নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বিভিন্ন দেশ তেলের মজুত রাখে। এটা ‘স্ট্র্যাটেজিক পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ’ বা এসপিআর নামে পরিচিত। বাইডেন প্রশাসন এই এসপিআর থেকেই তেল কোম্পানিগুলোর কাছে অপরিশোধিত তেল বিক্রি করবে। চীন, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলোকেও যুক্তরাষ্ট্র তেল ছাড়ার অনুরোধ করেছে। অনুরোধের পর এই দেশগুলোও তেল ছাড়তে রাজি হয়েছে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্র দামের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংস্থা ওপেক ও তার সহযোগী দেশগুলোকে (যেমন- রাশিয়া) উৎপাদন বাড়াতে অনুরোধ করেছিল। কিন্তু তাতে আশানুরূপ সাড়া মেলেনি। এরপরই মিত্র দেশগুলোকে মজুত থেকে বাজারে তেল ছাড়তে আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্ববাজারে তেলের দাম গত ১ বছরে ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, এসপিআর থেকে তেল ছাড়াসহ রপ্তানিকারক দেশগুলো তেল ছাড় করলে দাম ১০ শতাংশ হ্রাস পাবে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্র আগামী ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ কংগ্রেসের অনুমোদন দেওয়া ১ কোটি ৮০ লাখ ব্যারেল তেল বিক্রি শুরু করবে। এখন পর্যন্ত মার্কিন মিত্রদের মধ্যে ভারত জানিয়েছে, তারা এসপিআর থেকে ৫০ লাখ ব্যারেল তেল বাজারে ছাড়বে। যুক্তরাজ্য ঘোষণা দিয়েছে, তারা স্বেচ্ছায় ১৫ লাখ ব্যারেল বাজারে ছাড়ছে। দক্ষিণ কোরিয়া জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য মিত্রদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পর তাদের এসপিআর ব্যবহারের পরিমাণ ও দিনক্ষণ জানিয়ে দেওয়া হবে। জাপান তাদের মজুত তেল ব্যবহার সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বুধবার জানাবে বলে জানিয়েছে। আর চীন সবার আগেই মজুত তেল বাজারে ছাড়ার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে।
গত মাসে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম উঠেছিল প্রতি ব্যারেল ৮৬ ডলারে, যা বিগত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) এর দাম অনেকটা কমে বিক্রি হয়েছে ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলারেরও নিচে। মার্কিন প্রশাসন এর আগে তিনবার এসপিআর থেকে তেল বিক্রির অনুমোদন দিয়েছিল। প্রথমবার ১৯৯১ সালে উপসাগীয় যুদ্ধের সময়, এরপর ২০০৫ সালে হ্যারিকেন ক্যাটরিনার পর এবং সবশেষ ২০১১ সালে ওপেক সদস্য লিবিয়ায় যুদ্ধ চলার সময় এসপিআর থেকে তেল নেওয়া হয়েছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র এবারই প্রথম বিশ্বের বৃহত্তম তেল ভোক্তাদের সঙ্গে সমন্বিতভাবে এসপিআর ব্যবহারের ঘোষণা দিয়েছে।