দেশের অন্যতম শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী বলেছেন, আন্তঃদেশীয় নৌপথ পরিবহন ব্যবস্থাই ভবিষ্যৎ। কারণ এই পথে পরিবহন সহজ ও ব্যয় সাশ্রয়ী। সোমবার (২২ নভেম্বর) বিশ্বব্যাংক আয়োজিত ‘এক দক্ষিণ এশিয়া’ ধারণার ওপর ‘দক্ষিণ এশিয়ায় আন্তঃআঞ্চলিক বিনিয়োগ পুনরুদ্ধারের পথ’ বিষয়ক এক ভার্চুয়াল আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
রিজিওনাল ইন্টিগ্রেশন অ্যান্ড এনগেজমেন্ট দক্ষিণ এশীয় পরিচালক () সিসিল ফ্রুমানের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের পরিচালক হেক্টর গোমেজ অং, পাকিস্তানের বিনিয়োগ বোর্ডের সচিব ফারিনা মাজহার, গবেষণা সংস্থা উইলসন সেন্টারের ফেলো ও লেখক সঞ্জয় কাঠুরিয়া।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, নৌপথে পরিবহনই ভবিষ্যৎ। সবাই জানি নৌপথে পরিবহন ব্যয় কম। এটি অন্তত ১০ শতাংশ খরচ কমিয়ে দেয়। শত বছর আগ থেকেই বাংলাদেশ-ভারত নৌপথে সংযুক্ত। আমরা নৌপথে পুরো ভারতের সঙ্গে সংযুক্ত হতে চাই। আমাদের উচিত এমন ব্যবস্থা গড়ে তোলা যেন বাংলাদেশ থেকে ছোট জাহাজ নিয়ে আমরা ভারতের বন্দরে যেতে পারি এবং ভারতীয় রপ্তানিকারকরাও যেন একই সুবিধা পেতে পারেন।
রেলপথে বাংলাদেশ-ভারত যোগাযোগ ব্যবস্থা বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কম খরচে নৌপথে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা দক্ষিণ ভারতের সঙ্গে চমৎকার যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেন।‘এক দক্ষিণ এশিয়া ধারণায় প্রতিবেশী দেশগুলোতে বিনিয়োগের যাত্রার বিষয়টি লোকজনকে বুঝতে হবে। যোগাযোগ ও একাঙ্গীকরণের উন্নয়ন এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের জীবন বদলে দিতে পারে, তবে সময় লাগবে।’
আহসান খান চৌধুরী, আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়াতে পারলে বিনিয়োগ আরও বাড়বে উল্লেখ করে বলেন, ভারতে আমাদের দারুণ মার্কেট আছে। আমার অভিজ্ঞতা হচ্ছে, ভারত আমাদের বাণিজ্যের বিষয়ে অনেক ইতিবাচক। এখানে আঞ্চলিক ব্যবসা-বাণিজ্য অনেক উন্নত পর্যায়ে নেওয়ার সুযোগ আছে।
স্থলসীমান্ত ইস্যু ও অনুমোদন প্রক্রিয়াও আছে। আমরা সবাইতো মানুষ, আমাদের বোঝা-পড়ার ঘাটতি আছে। এছাড়া বিশ্বাসযোগ্যতারও একটা বিষয় থাকে। কোভিড-১৯ এক্ষেত্রে বিশ্ব সম্প্রদায়কে নতুন ভাবনার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে।’
প্রাণ-আরএফল গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, ভারতের নর্থ-ইস্ট আমাদের প্রতিবেশী। এটা বাংলাদেশের জন্য বিউটিফুল মার্কেট। এখানে আমাদের রপ্তানিকারকদের অটোমেটিক অ্যাকসেস থাকতে হবে। আবার সেখানকার সাধারণ মানুষের চাহিদাগুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে। সেখানকার ব্যবসায়ীরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। আমি মনে করি সময় এখন আমাদের। করোনা সংকটের পরে বিশ্ব অনেক পরিবর্তন হয়েছে। বিশ্ব নতুন কিছু আমাদের শিখিয়েছে। এই অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের কাজ করতে হবে।
গবেষক সঞ্জয় কাঠুরিয়া বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রতিযোগিতামূলক এবং নির্বিঘ্ন হতে হবে। বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ এমন একটি কাঠামোয় হবে, যেখানে সমস্ত সম্ভাবনা থাকতে হবে এবং যেখানে সরকারি অনুমোদন নিতে হবে না।
প্রাণ গ্রুপের প্রশংসা করে আইএফসির আঞ্চলিক পরিচালক হেক্টর গোমেজ অং বলেন, এক দক্ষিণ এশিয়া গড়ার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হলো বিশ্বাস ও সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা। প্রাণের মতো কোম্পানি বিশ্বাসের জায়গাটা (প্রতিবেশী দেশে বিনিয়োগ) গড়ে তুলেছে, যা অন্য কোম্পানিগুলো অনুসরণ করতে পারে।