‘রহস্যময়’ ভাইরাসজনিত জ্বর পাকিস্তানের বৃহত্তম শহর করাচিতে ছড়িয়ে পড়ছে । এর সব উপসর্গ ডেঙ্গুর মতো। ডেঙ্গু হলে যেমন রোগীর প্লাটিলেট ও শ্বেত রক্তকণিকা কমে যায়, নতুন অসুখেও তেমনটি দেখা যাচ্ছে। কিন্তু ডেঙ্গুর পরীক্ষা করালে ফলাফল আসছে নেগেটিভ। গত বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) স্থানীয় চিকিৎসক এবং প্যাথলজিস্টদের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশন্যাল।
পাকিস্তানের বিখ্যাত ডো ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেসের আণবিক প্যাথলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সাঈদ খান বলেন, আমরা কয়েক সপ্তাহ ধরে ভাইরাল জ্বরের ঘটনা দেখছি, যেখানে প্লাটিলেট ও শ্বেত রক্তকণিকা কমে যাচ্ছে। অন্য উপসর্গগুলোও ডেঙ্গু জ্বরের মতো। কিন্তু এসব রোগীকে যখন এনএস১ অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করানো হয়, তার ফলাফল নেগেটিভ বেরোচ্ছে।
অধ্যাপক সাঈদ খান বলেন, এটি ‘আরবোভাইরাস’ পরিবারের আরেকটি সদস্য হতে পারে। এটি ডেঙ্গু ভাইরাস কিনা তা দেখার জন্য আমরা পিসিআর পরীক্ষাও করেছি, তবে এটি ডেঙ্গু নয়। এটি জিকা ভাইরাসও নয়, কারণ জিকা ভাইরাস ভিন্নভাবে আচরণ করে। এই ভাইরাসটি ডেঙ্গু ভাইরাসের কোনো অজানা ধরন হওয়ার সম্ভাবনাও কম।
আণবিক বিজ্ঞানী ড. মুহাম্মদ জোহাইবও নিশ্চিত করেছেন, ডেঙ্গুর উপসর্গ রয়েছে, কিন্তু ডেঙ্গু নয়, এমন বেশ কয়েকজন রোগী তিনিসহ শহরের অন্য প্যাথলজিস্টরা প্রত্যক্ষ করেছেন। ড. জোহাইব বলেন, ক্রমবর্ধমান ডেঙ্গুর সঙ্গে এই রহস্যময় ভাইরাল রোগের কারণে করাচিতে প্লাটিলেটের মেগা ইউনিটের পাশাপাশি র্যানডম ইউনিটের চরম ঘাটতি দেখা দিয়েছে। মানুষ অসুস্থ প্রিয়জনের জন্য প্লাটিলেট খুঁজতে ছোটাছুটি করছে।
তবে হেমাটোলজিস্ট ডা. সাকিব আনসারি জানিয়েছেন, ডেঙ্গুর উপসর্গযুক্ত কিন্তু ডেঙ্গু নয়- করাচিতে এমন অসুখ ছড়ানোর ঘটনা একেবারে নতুন নয়। এ ধরনের ঘটনা ২০০৮ সাল থেকেই দেখা যাচ্ছে। এ জন্য কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।