শরীয়তপুরে প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকে সিল মারার দৃশ্য ভিডিও করায় দুই সাংবাদিককে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। ১১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে সদরের তুলাসার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দশরশি ইবতেদায়ি মাদ্রাসাকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার দুই সাংবাদিক হলেন ডিবিসি চ্যানেলের শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি বি এম ইশ্রাফিল ও দীপ্ত টিভি এবং বাংলা ট্রিবিউনের জেলা প্রতিনিধি রাজিব হোসেন। আহতদের সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত দুই সাংবাদিক বলেছেন, আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী জামাল হোসাইন ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য প্রার্থী জিয়াসমিন বেগমের কর্মী-সমর্থকরা তাদের মারধর করেছেন।
খবর পেয়ে সাংবাদিক বি এম ইশ্রাফিল, রাজিব হোসেন রাজন, সগির হোসেন, ইব্রাহীম হোসেন ও মেহেদী হাসান ওই কেন্দ্রে যান। প্রকাশ্যে নৌকায় ভোট দেওয়ার দৃশ্য ভিডিও করলে ডিবিসির ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন তারা। পরে সাংবাদিক ইশ্রাফিল ও রাজিব হোসেনকে কেন্দ্রের বাইরে এনে মারধর করেন। সহকর্মীরা দুই সাংবাদিককে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
সাংবাদিক বি এম ইশ্রাফিল বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় দেখি ‘বই প্রতীকের’ জিয়াসমিন বেগমের দেবর ও আত্মীয়-স্বজন প্রিসাইডিং কর্মকর্তার সামনে নৌকা এবং বই মার্কায় সিল মারছিল। এই দৃশ্য ভিডিও করার সময় আমাদের ওপর হামলা চালায় আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা।
রাজিব হোসেন রাজন বলেন, ছবি ও ভিডিও করায় আমাদের ওপর হামলা চালায় তারা। সহকর্মীরা আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। আমরা এই হামলার বিচার চাই। প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকে সিল এবং সাংবাদিকদের মারধরের বিষয়ে ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা শামীম মাহবুব বলেন, ভোট চলাকালীন পুলিং এজেন্টদের সঙ্গে সাংবাদিকরা বিতর্কে জড়ান। এতে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, এই কেন্দ্রে ৯৫২ ভোটার। নারী ভোটার ৪৩৫ জন ও পুরুষ ভোটার ৫১৭ জন। ভোটগ্রহণ শেষে এখন গণনা চলছে।
কর্তব্যরত চিকিৎসক সাবিকুন নাহার বলেন, ইশ্রাফিল মাথায় আঘাত পেয়েছেন। রাজিব হোসেন শরীরে আঘাত পেয়েছেন। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
শরীয়তপুর ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রোকনুজ্জামান পারভেজ বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় দুই সাংবাদিকের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। দোষীদের আটক করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
সদরের পালং মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আক্তার হোসেন বলেন, সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনাটি দুঃখজনক। হামলার বিষয়টি আমি শুনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জাহিদ হোসেন বলেন, বিষয়টি প্রিসাইডিং অফিসারকে জানিয়েছি। ভোট শেষে ঘটনাটি তদন্ত করে দেখবো।