ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক চালু উপলক্ষে দেশে হ্যান্ডসেট তৈরি এবং আমদানি পর্যায়ে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা, বিটিআরসি। নতুন হ্যান্ডসেট বাজারজাত কিংবা উৎপাদন করতে হলে অবশ্যই তা ফাইভ-জি উপযোগী হতে হবে, বলে নির্দেশ দিয়েছে বিটিআরসি। চাহিদা অনুযায়ী মোবাইল সেট সরবরাহ করতে এরইমধ্যে প্রস্তুতি নিয়েছে হ্যান্ডসেট নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে আগে অবৈধ হ্যান্ডসেটের বাজার পুরোপুরি বন্ধের দাবি তাদের।
আগামী মাসেই প্রযুক্তি খাতে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে বাংলাদেশ। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ফাইভ-জি’র লাইসেন্স পাবে মোবাইল অপারেটরা। ২০১৮ সালে ফোর-জি চালুর পর, দ্রুততম সময়ে ফাইভ-জি’তে বিনিয়োগ ঝুঁকিমুক্ত করতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে বিটিআরসি। সেবার দুয়ার বিস্তৃত করতে, বাজারে ফাইভ-জি উপযোগী হ্যান্ডসেট সরবরাহের প্রস্ততিও নেয়া হচ্ছে। এ লক্ষ্যে হ্যান্ডসেট আমদানি এবং উৎপাদন পর্যায়ে দেয়া হয়েছে নতুন নির্দেশনা।
বিটিআরসি’র কমিশনার এ. কে. এম. শহীদুজ্জামান বলেন, প্রত্যেকটি সেটে যেন ফাইভ জি কম্প্যাটিবিলিটি থাকে, এছাড়াও ২.৬-২.৩-২.৫ ব্যান্ডের কম্প্যাটিবিলিটি চিপ যেন অবশ্যই থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে। মোট স্মার্টফোনের মাত্র ৩০ শতাংশ ফোর-জি হ্যান্ডসেট। অপারেটররা বলছে, মাত্র ৩০ শতাংশ ব্যবহারকারী দিয়ে বাকী ৭০ শতাংশ ব্যবসার মুনাফা অর্জন সম্ভব নয়। হ্যান্ডসেটের উচ্চমূল্যের কারণে, একই অবস্থা ফাইভ-জি’র ক্ষেত্রেও হওয়ার আশঙ্কা তাদের। এমন পরিস্থিতিতে, স্মার্টফোনের সহজ প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে, গ্রাহকদের কিস্তিতে হ্যান্ডসেট ক্রয়ের সুবিধা দেয়ার পরামর্শ তাদের।
এ ব্যাপারে মোবাইল অপারেটর রবি’র হেড অফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স শাহেদ আলম বলেন, ইন্সটলমেন্ট পেমেন্টের জন্য আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, সহজ কিস্তিতে হ্যান্ডসেট গ্রাহকের হাতে দিতে হলে সেটটি লক করার সুবিধা থাকতে হবে। আমরা রেগুলেটরকে এ প্রস্তাব ইতোমধ্যেই দিয়েছি, তারা অনুমোদন দিলে আমরা সহজ কিস্তিতে আমাদের গ্রাহকের হাতে ফাইভজি ফোন পৌছুতে পারবো।
ফোর-জি’র পাশাপাশি ফাইভ-জি প্রযুক্তির হ্যান্ডসেট উৎপাদনে পূর্ণ সক্ষমতা আছে বলে জানান, টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা ইতিপূর্বেই যে পরিমাণ কারখানা চালু অবস্থায় দেখছি এবং আরও কয়েকটি কারখানা চালু হওয়ার পথে আছে। সব মিলিয়ে আমাদের মোবাইল সেট তা ফোরজি বা ফাইভজি যেটাই হোক না কেন তার কোনোটারই ঘাটতিতে পড়তে হবে না।
অবৈধ হ্যান্ডসেটের ব্যবসা অব্যাহত থাকলে, সুফল মিলবে না বলে মনে করেন আমদানিকারক এবং নির্মাতারা। এ ব্যাপারে ট্রানশান বাংলাদেশ টেকনো এর প্রধান নির্বাহী রেজওয়ানুল হক বলেন, এখানে প্রায় ১০টা ইন্ডাস্ট্রি হয়ে গিয়েছে, এখন টোটাল মোবাইলের যে রিকোয়ারমেন্ট তার ৬০ শতাংশের চাহিদা পূরণ সম্ভব এটা দিয়ে। তবে, অবৈধ মোবাইল আমদানি যদি বন্ধ না করা যায় তাহলে এসব ইন্ডাস্ট্রি ও ফ্যাক্টরিগুলো মারাত্মক ঝুঁকিতে থাকবে। উল্লেখ্য, বর্তমাদের দশটি কোম্পানি দেশে মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদন করছে। এসব কোম্পানি বছরে দেড় কোটির বেশি সেট বাজারজাত করে।