সরকার দেশে একটা ‘ভয়ংকর’ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, দেশে গণতন্ত্র, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মানুষের বাক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই। ৩৫ লাখের বেশি মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জর্জরিত করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত গুম ও খুনের ঘটনা ঘটছে। সরকার পুরোপুরিভাবে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা কায়েম করেছে।
শেরে বাংলা রোববার নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ শেষে তিনি এ কথা বলেন। ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে এ শ্রদ্ধা জানানো হয়। ১৯৭৫ সালে ৭ নভেম্বর অভ্যুত্থান-পালটা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অতিষ্ঠিত হন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। বিএনপি এই দিনকে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসাবে পালন করে আসছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস এবং জাসদ সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান দিবস হিসাবে পালন করে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, যে আশা-আকাঙ্ক্ষা ও চেতনার মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম সেই আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত করার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল জিয়াউর রহমান নেতৃত্বে। ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র-স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুসংহত করতে আমরা সক্ষম হয়েছিলাম। আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্রকে ফিরে পেয়েছিলাম, মুক্ত অর্থনীতি একটি সমাজ নির্মাণ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে- সাম্রাজ্যবাদ, আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ আবার রুখে দাঁড়িয়েছিল, সংবাদপত্রের ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়েছিল। সর্বোপরি বাংলাদেশে স্বাতন্ত্র্য নিয়ে, পরিচয় নিয়ে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়েছিল। আমরা বারবার এ দিনটিকে স্মরণ করি এবং দিনটি আমাদের অনুপ্রেরণা জোগায়। তিনি অভিযোগ করেন, স্বৈরাচারী-ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের সব স্বপ্ন ও আশা-আকাঙ্ক্ষাকে ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। রাষ্ট্রের সব স্তম্ভগুলোকে তারা নিজের হাতে নির্মমভাবে ধ্বংস করেছে। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না।
এর আগে সকালে বিএনপি মহাসচিব দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও নজরুল ইসলাম খানকে নিয়ে জিয়াউর রহমানের মাজারে যান। তারা সেখানে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন এবং তার (জিয়াউর রহমান) আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন। এ সময়ে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, নাজিম উদ্দিন আলম, আবদুস সালাম আজাদ, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, দেওয়ান মো. সালাউদ্দিন, খন্দকার আবু আশফাক ছাড়াও অঙ্গসংগঠনের আফরোজা আব্বাস, সাইফুল আলম নিরব, হেলেন জেরিন খান, আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, হাসান জাফির তুহিন, শহিদুল ইসলাম বাবুল, সাদেক আহমেদ খান, আমিনুল হক, শাহ নেসারুল হক, হেলাল খান, আবুল কালাম আজাদ, রফিকুল ইসলাম মাহতাব, আবদুর রহিম, জাকির হোসেন রোকন, অধ্যাপক হারুন আল রশিদ, নুরুল ইসলাম নয়ন, ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের পর যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, কৃষক দল, ওলামা দলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে ভোরে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়সহ সারা দেশে দলের অফিসে বিএনপির পতাকা উত্তোলন করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন পোস্টার ও গণমাধ্যমে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে বিএনপি।