নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় আ’লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মো. আলাউদ্দিন (৩২) নামে এক যুবলীগ কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় দু’পক্ষের ১৩ জন গুলিবিদ্ধ সহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বসুরহাট বাজারের রূপালী চত্বর, থানা এলাকা ও পৌরসভা প্রাঙ্গণে দফায় দফায় কাদের মির্জা ও বাদল গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
নিহত মো. আলাউদ্দিন উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের মমিনুল হকের ছেলে। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন- মো. রাজিব, মাঈন উদ্দিন, শাহ আলম, আলা উদ্দিন, হৃদয়, দেলোয়ার হোসেন, সোহেল, শাহাদাত হোসেন, আরাফাত হোসেন, বেলাল হোসেন সেলিম। এছাড়া আহত হয়েছেন- সাহাব উদ্দিন, জনি, সেলিম, ওয়াহিদ কামাল, রিপন, রফিক চৌধুরী, ফিনন চৌধুরী, দিপু, সুমন, আরিয়ান শিপন, শরীফ উল্যাহ টিপু, মানিক, শরীফ, আল মাহাদি, রাজিব হোসেন রাজু, নবায়ণ হোসেন, আদনান শাহ, সালা উদ্দিন।
আহত পুলিশ সদস্যরা হচ্ছেন ওসি মীর জাহিদুল হক রনি, এসআই জাকির হোসেন, নিজাম, কনেস্টবল খোরশেদ, আলাউদ্দিন, আবুল কালাম। নোয়াখালী সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম বাংলানিউজকে জানান, গুলিবিদ্ধ একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও আরও ১১জন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নোয়াখালী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টায় উপজেলা আ’লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানের উপর হামলার প্রতিবাদে বসুরহাট বাজারের রূপালী চত্বরে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে উপজেলা আ’লীগ। পরে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সভায় আবদুল কাদের মির্জার অনুসারীরা সভার একেবারে শেষ মুহূর্তে ককটেল ও গুলি ছোঁড়ে এবং সভার পাশ্ববর্তী এলাকায় ব্যাপক ককটেল বিষ্ফোরণ করে একটি নৈরাজ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি করে। এসময় সভাস্থল থেকে উপজেলা আ’লীগের নেতারা একসঙ্গে মির্জা কাদেরের অনুসারীদের প্রতিরোধ করতে গেলে মাকসুদাহ গার্লস স্কুল রোড এলাকায় দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা, ককটেল বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
এসময় পুরো বসুরহাট বাজার জুড়ে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। এছাড়াও থেমে থেমে ক্ষমতাসীন দলের দু’পক্ষের অনুসারীরা বসুরহাট বাজারের বিভিন্নস্থানে ককটেল বিস্ফোরণ, গোলাগুলি ও ভাঙচুর চালায়। একপর্যায়ে রাত ১০টায় মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারীরা বসুরহাট পৌরসভা কার্যালয়ে হামলা চালালে উভয়পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আহত হন ওসি মীর জাহিদুল হক রনিসহ চার পুলিশ। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মো. আলাউদ্দিন নামে একজন মারা যান।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল বাংলানিউজকে জানান, নিহত আলাউদ্দিন তার যুবলীগ কর্মী। সে তার পাশের বাড়ির ছেলে। তিনি এ হত্যার জন্য কাদের মির্জাকে দায়ী করেন । এ বিষয়ে জানতে কাদের মির্জার মোবাইলে কল করা হলে তিনি কল ধরেননি। কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহিদুল হক রনি বাংলানিউজকে জানান, পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এছাড়াও পুলিশ যে কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে সর্তক অবস্থানে রয়েছে। প্রসঙ্গত, গত কয়েক দিন থেকে কাদের মিজার সঙ্গে স্থানীয় আ’লীগ নেতাদের দ্বন্ধ চলছিল। কয়েক দিন আগে উপজেলার চাপরাশির হাট বাজারে দু’পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন মুজাক্কির মারা যায়।