ঢাকাই সিনেমার খলনায়ক আহমেদ শরীফ। বাংলা সিনেমায় অভিনয় করেছেন প্রায় আট শতাধিক। তবে সিনেমার বর্তমান অবস্থা নিয়ে খুশি নন এই অভিনেতা। কীভাবে বাংলাদেশের সিনেমা শেষ হয়ে গেল, সেই প্রশ্ন রেখে তিনি বললেন, ‘খুব দুঃখ লাগে’।
আহমেদ শরীফ বর্তমানে নিউইয়র্কে স্থায়ীভাবে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। ৩ নভেম্বর বুধবার ব্যক্তিগত কাজে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আসেন আহমেদ শরীফ। এরপর আসেন সচিবালয়ে অবস্থিত গণমাধ্যম কেন্দ্রে। এসময় সেখানে উপস্থিত থাকা সাংবাদিকদের কাছে নিজের মনের কথা তুলে ধরেন এই অভিনেতা।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিনেমার বর্তমান অবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “খুব কষ্ট লাগে। আমি জানি না কেন। কাউকে দোষারোপ করবো না। কারণ দোষারোপ করা ঠিক নয়। কী কারণে এরকম হয়েছে, বাংলাদেশের চলচিত্র, চলচ্চিত্রের ব্যবসা। খুব দুঃখ লাগে। একটি সময় ছিল, বড়-বড় হলগুলোতে ‘হাউজফুল’ একটি লাল বোর্ড ছিল। এখন দীর্ঘ ২০ বছরে কোথায়-কোথায় দেখেছেন? লাল বোর্ডটি নাই হয়ে গেছে।”
এখন ১৪-১৫ জন দর্শক নিয়ে হল চলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি তো অবাক। কী করে চলে! মালিক বেতন দিতে পারে না। না চললে কী করবে? আসলেই খুব কষ্টের কথা।’
তিনি বলেন, ‘একজনের সঙ্গে আরেকজনের হৃদয়ের যে কানেকশন, সেটাও নষ্ট হয়ে গেছে। ছোট-বড়দের মধ্যে কোনো রকমের শৃঙ্খলা নেই। আমরা কোনো দিন, অন্তত আমি নিজের কথা বলি, আমি কোনো দিন খলিল ভাই, রাজ্জাক সাহেব, তাদের সামনে চেয়ারে বসতাম না। যদি তারা অনুমতি দিত, তাহলে বসতাম। যতক্ষণ অনুমতি দিত না ততক্ষণ পর্যন্ত আমি দাঁড়িয়ে থাকতাম।’
আহমেদ শরীফ বলেন, ‘এখন কী দেখেছেন, এরকম কিছু আছে, নেই। আমি মনে করি, অনেক কিছু মিলিয়েই আজকে এই চলচ্চিত্র, যেটা সারা পৃথিবীতে একটা বড় কিছু। এটি বাংলাদেশ থেকে শেষ হয়ে গেল। একেবারেই শেষ হয়ে গেল।’
ব্যবসাসফল হওয়া অনেক সিনেমার এ অভিনেতা চলচিত্রের এ অবস্থার জন্য কাউকে দায় দিচ্ছেন না। তিনি বলেন, ‘দায়ী কাউকে বলতে পারবো না। কপালের লিখন হয়তো। দায়ী করা যাবে না, কারণ সে হল আছে, সেই শিল্পী আছে, পরিচালকরাও আছে। একইভাবে লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনও হচ্ছে, সিনেমাও তৈরি হচ্ছে কিন্তু চলছে না। কেন, কী কারণ, সেটা খুঁজে বের করতে পারলেই হয়ে যাবে।’
আহমেদ শরীফ মনে করেন, চলচিত্রের এ অবস্থা থেকে উন্নতি ঘটাতে আধুনিক সিনেমা হল তৈরি করতে হবে। ‘আমি মনে করি, সরকারিভাবে যদি ৬৪টি জেলায় যদি কিছু লেটেস্ট সিনেমা হল বা মুভি থিয়েটার তৈরি করা যায় এবং যদি বিপুল উৎসাহ নিয়ে প্রচার করা যায়, তাহলে আমার মনে হয় সিনেমা হল দেখার জন্য হলেও এবং আরাম নিতে হলেও অনেক লোক যাবে। ভাল ছবি বানিয়ে যদি হলগুলোতে দেওয়া হয় তাহলে দিনে-দিনে আবার ব্যবসা ফিরে আসবে। তবে ভালো ছবি হতে হবে।’
বিদেশে দেখলাম, শপিং করে, সিনেমা দেখে রেস্টুরেন্টে খায় এরপর বাড়ি যায়। আমাদেরও সেরকম স্টাইল করতে হবে। কারণ পৃথিবী এখন অনেক ফাস্ট হয়ে গেছে। এখন কেউ ঠেলাঠেলি করে সিনেমা হলে যেতে চায় না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘সিনেমা হলে যাবো, আরাম-আয়েশ করবো পাশে রেস্টুরেন্ট থাকবে ভালো, খাব এরপর রাতে চলে আসবো। একসাথে তিনটি কাজ করে এখন।