সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ইটভাটাগুলোয় কাজ করছেন শিশু শ্রমিক। এসব ভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে কয়লার বদলে ব্যবহার করা হচ্ছে জ্বালানি কাঠ। এছাড়া আবাসিক এলাকা ও কৃষি জমির মধ্যে গড়ে তোলা হয়েছে ইটভাটাগুলো। ইট তৈরি করা হচ্ছে ফসলি জমির উর্বর মাটি দিয়ে। এ ক্ষেত্রে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ এর অধিকাংশ ধারা লঙ্ঘিত হচ্ছে।উপজেলা ভাটামালিক সমিতির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তাড়াশে সততা ব্রিকস, নাবিলা সুপার ব্রিকস, বন্যা ব্রিকস, সাদিয়া ব্রিকস, আখী ব্রিকস, মেঘনা ব্রিকস, এম আর এইচ ব্রিকস, এমএমবি ব্রিকস ও এইচ এন্ড কে ব্রিকস নামে ৯টি ইটভাটা রয়েছে।
এদিকে, ৯টি ইটভাটাই সরকারি রাস্তার গা ঘেষে ও কৃষি জমি নষ্ট করে স্থাপন করা হয়েছে। ঝুরঝুরি-কালিবাড়ি গ্রামিণ সড়কের ৬ কিলোমিটারে মধ্যেই রয়েছে ৫টি ইটভাটা। ২টি ইটভাটা রয়েছে, খালকুলা-নওগাঁ গ্রামিণ সড়কের পাশে। অন্য ২টি গড়ে তোলা হয়েছে তাড়াশ-নিমগাছি আঞ্চলিক সড়কের একেবারে গা ঘেষে। শুধু তাই নয়, প্রতিটি ইটভাটার নিকটেই চারপাশে রয়েছে শ’ শ’ বসতি পরিবার। রয়েছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইটভাটার শ্রমিকরা বলেন, ইট পোড়ানোর কাজে ভাটার মালিকেরা দেদারচে জ্বালানি কাঠ ব্যবহার করছেন। একটি বড় ইটভাটায় একবারে চার থেকে সারে চার লাখ ইট পোড়াতে ২৫ দিনের মতো সময় লেগে যায়। এতে কমপক্ষে ১০ হাজার মণ জ্বালানি কাঠের প্রয়োজন হয়।
স্থানীয় ভুক্তভোগী আব্দুল ওয়াহাব, আব্দুল মান্নান, মনিরুল আকন, মৌসুমী পারভিন, সুরভি খাতুন, দিলরুবা খাতুন বলেন, ইটভাটার চিমনির বিশাক্ত কালো ধোঁয়ায় তাদের চোখ জ্বালাপোড়া করে, মাথা ঘোরায় ও বমি বমি লাগে। কালো ধোঁয়া ও ইটবাহী ট্রাকের ধুলাবালু নাকে ও মুখ দিয়ে ঢুকে মাঝে মধ্যেই সর্দি-কাশি হয়। তাছাড়া ইটবাহী ভারী ট্রাক চলাচল করায় গ্রামীণ সড়কগুলোর পাকা কার্পেটিং উঠে ও ইটের সোলিং নষ্ট হয়ে খানাখন্দে ভরে গেছে। সড়কের ধুলার আস্তরণে ঢাকা পড়ে আছে আশপাশের বসতঘর। ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় মরে যাচ্ছে ফসল।