চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাস না নেওয়া প্রায় ৩০ কোটি টাকা মূল্যের ৬৩ লট পণ্য নিলামে উঠছে আগামীকাল। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ কর্তৃপক্ষ এসব পণ্য নিলামে তুলছে। নিলাম পণ্যের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল, কোমল পানীয়, মোটর পার্টস, বাইসাইকেল পার্টস, ফেব্রিকস, কিউমিন সিড, টাইলস, ড্রাগন ফল, থ্রি হুইলার, মেশিনারিজ, ডুপ্লেক্স বোর্ড, ইলেকট্রিক ভেহিক্যাল, ফুটওয়ার সামগ্রী, হ্যান্ড সেনিটাইজার ও অগ্নি প্রতিরোধক দরজা।
দীর্ঘদিন খালাস না নেওয়া আমদানি পণ্য প্রতিমাসে সাধারণত একবার নিলামে তোলে কাস্টম হাউজ কর্তৃপক্ষ। তবে সাম্প্রতিক সময়ে নিলামের গতি কিছুটা বেড়েছে। চলতি বছর এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৮টি নিলাম। বৃহস্পতিবার হতে যাচ্ছে ১৯তম নিলাম। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের সহকারী কমিশনার আলী রেজা যুগান্তরকে বলেন, ‘৬৩ লট পণ্যের বিস্তারিত বিবরণ ও ভিত্তিমূল্য এরই মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। পণ্যগুলো যেখানে যে অবস্থায় আছে, সেখান থেকেই বিক্রি হবে। আগ্রহী ক্রেতাদের ইতোমধ্যে সরেজমিন পণ্য দেখার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এবার যেসব পণ্য নিলামে তোলা হচ্ছে এর মোট ভিত্তিমূল্য বা সংরক্ষিত মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। নিলাম পণ্যের মধ্যে দীর্ঘদিনের পুরোনো মালামালও থাকে। তাই যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়, সাধারণত তা পাওয়া যায় না। সাধারণত ভিত্তি বা সংরক্ষিত মূল্যের ৬০ শতাংশ উঠলে নিলাম নিষ্পত্তি করা যায়। অন্যথায় দ্বিতীয় নিলাম ডাকা হয়। সংরক্ষিত মূল্য যাই হোক না কেন, দ্বিতীয় নিলামে প্রথম নিলামের সর্বোচ্চ মূল্যের চেয়ে বেশি দাম উঠলে সেই মূল্যে নিষ্পত্তি করা যায়। যদি এভাবেও বিক্রি করা সম্ভব না হয়, তাহলে তৃতীয় দফা সর্বোচ্চ মূল্যে নিলাম নিষ্পত্তি করা হয়ে থাকে।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ সূত্র জানায়, নিলামে অংশগ্রহণের জন্য চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের রাজস্ব কর্মকর্তা (প্রশাসন), চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের দপ্তর, মোংলা কাস্টম হাউজের সহকারী/ডেপুটি কমিশনার কার্যালয় এবং যুগ্ম কমিশনার (সদর), শুল্ক আবগারি ও ভ্যাট কমিশনারেটের (ঢাকা দক্ষিণ) কার্যালয়ে দরপত্র জমা দেওয়া যাবে বুধবার (অফিস চলাকালীন) ও বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত। দুপুর আড়াইটায় দরপত্র খোলা হবে। জমা পড়া দরপত্র মূল্যায়নের পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
চট্টগ্রাম বন্দরের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, দীর্ঘদিন পড়ে থাকা আমদানি কনটেইনার বন্দরের জন্য এক ধরনের বোঝা। এগুলো আইনি প্রক্রিয়ায় নিলামে তুলতে কাস্টম হাউজকে প্রায় প্রতিমাসেই বন্দরের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়। তারা নিলামের আয়োজন করে। তবে যথাসময়ে নিলামের আয়োজন করতে না পারায় বিপুল পরিমাণ নিলামযোগ্য আমদানি পণ্য বন্দরে পড়ে থাকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বেআইনিভাবে পণ্য আমদানি করলে তা কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জব্দ করে। এছাড়া বছরের কোনো কোনো সময়ে দেশীয় বাজারে পণ্যের মূল্য কমে যায়। তখন পণ্য ছাড় করে বাজারে ছাড়লে লোকসানের আশঙ্কা থাকে। তাই অনেক আমদানিকারক বড় লোকসান থেকে বাঁচতে পণ্য খালাস নেন না। এভাবে বন্দরের অভ্যন্তরে খালাস না নেওয়া পণ্য জমে যায়।