গণমাধ্যমে ব্যক্তিগত বিনিয়োগ বন্ধের পরিকল্পনা করেছে চীন। গণমাধ্যমের সবক্ষেত্র নিয়ন্ত্রণে চীনা সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে। খসড়া নির্দেশিকা অনুযায়ী, ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর গণমাধ্যমে বিনিয়োগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। এমনকি বিদেশি গণমাধ্যমের কোনো সংবাদও পুনঃপ্রকাশ করা যাবে না বলে খসড়া নির্দেশিকার বরাত দিয়ে মার্কিন গণমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা জানিয়েছে।
সরকারবিরোধীদের কণ্ঠরোধের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে বেইজিং। নতুন এই প্রস্তাব সেটাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ প্রসঙ্গে চীনের রাজনৈতিক বিশ্লেষক উ জুওলাই বলেন, কমিউনিস্ট পার্টি সব সংবাদ এবং সমালোচনাকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে। গণমাধ্যমের ওপর ব্যক্তিগত বিনিয়োগ নিষিদ্ধের সর্বশেষ এই প্রস্তাব নিয়ে চীনের অনলাইনে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞের ধারণা চীনের এই নিয়ন্ত্রণ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্বের পথ সুগম করবে।
সাধারণত চীনের সংবাদপত্রের মতো গণমাধ্যমগুলো মূলত সরকারি খাতের মাধ্যমে অর্থায়ন করা হয়। তবে বিভিন্ন অনলাইন সংবাদমাধ্যমগুলো ব্যক্তিগত ও বিদেশি বিনিয়োগের ওপর নির্ভরশীল। রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্সের (আরএসএফ) মতে , ইন্টারনেটের ওপর অব্যাহতভাবে নজিরবিহীন সেন্সরশিপ, নজরদারি ও প্রপাগান্ডা চালিয়ে চীন সাংবাদিকদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ দেশের তালিকায় নাম লিখিয়েছে। এমনকি লেখকদের জন্যও ‘বড় জেলারে’ পরিণত হয়েছে দেশটি।
চলতি বছরের মার্চ মাসে প্রকাশিত আরএসএফের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ২০১৩ সালে চীনের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে অনলাইন সেন্সরশিপ, নজরদারি এবং প্রপাগান্ডাকে অনন্যমাত্রায় নিয়ে গেছেন। চীনের সাইবারস্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (সিএসি) সব কার্যক্রম জিনপিং স্বয়ং তত্ত্বাবধায়ন করেন। এই সংস্থা চীনের ৯৮৯ মিলিয়ন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর তথ্য নিয়ন্ত্রণ করে।