প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অধিকতর শক্তিশালী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতিসংঘ গড়ে তোলার জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এই শুভক্ষণে, আসুন আমরা পারস্পরিক শ্রদ্ধা, অংশীদারত্ব, সহযোগিতা ও সংহতির ভিত্তিতে একটি অধিকতর শক্তিশালী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতিসংঘ (ইউএন) গড়ে তোলার জন্য প্রচেষ্টা চালাই। আসুন আমরা জাতিসংঘকে আমাদের আশার বাতিঘর বানাই। জাতিসংঘের ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দেওয়া বার্তায় শনিবার প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনের এই ঐতিহাসিক বছরে বাংলাদেশ আমাদের জনগণের উন্নত ভবিষ্যৎ রচনা ও উন্নততর ভবিষ্যতের জন্য একটি ব্লুপ্রিন্ট তৈরিতে যতটুকু করা সম্ভব তা করতে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এ শুভক্ষণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বাংলাদেশ জাতিসংঘ সনদের লক্ষ্য ও আদর্শের প্রতি অটল থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছে। তিনি বলেন, বিগত ৭৬ বছরে জাতিসংঘ শান্তি ও নিরাপত্তা, মানবাধিকার, নারীর ক্ষমতায়ন ও টেকসই উন্নয়নসহ বহু ক্ষেত্রে মানবজাতির সমৃদ্ধিতে পাশে থেকেছে। তবে তিনি এ কথাও বলেন, ‘আমরা বিশ্বের অনেক অংশের মানুষকে তাদের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করতে দেখছি। ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য অধিকারের সংগ্রাম এবং মিয়ানমারে কয়েক দশক ধরে চলা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর উৎপীড়ন-এমনই কিছু দৃষ্টান্ত।’
এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন, নিরস্ত্রীকরণ, সন্ত্রাসবাদ, জাতিগত ও ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার মতো অনেক অমীমাংসিত সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ রয়েছে বিশ্বে; বিশ্ব একটি অদৃশ্য মারাত্মক মহামারির সম্মুখীন হয়েছে, যাতে দুই বছরে লাখো মানুষের মৃত্যৃর সঙ্গে জীবন ও জীবিকা ধ্বংস করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ সনদের কালজয়ী মূল্যবোধ ‘আমাদের জনগণকে’ সেবা করার জন্য ‘আমাদের শক্তিকে একত্রিত করা’ আগের চেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে রূপ লাভ করেছে। তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা বিশ্ব শান্তির জোরালো প্রবক্তা, আন্তর্জাতিক উন্নয়নে সক্রিয় অবদানকারী এবং সর্বজনীন মূল্যবোধের বিশ্বস্ত সমর্থক হিসাবে জাতিসংঘের সঙ্গে অংশীদারত্ব বজায় রেখেছি। তিনি বলেন, ‘শান্তির সংস্কৃতি’র অন্যতম অগ্রণী প্রবক্তা বাংলাদেশ আজ জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা কার্যক্রমে একটি ব্র্যান্ড নাম হয়ে উঠেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এসডিজি বাস্তবায়ন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, নারীর ক্ষমতায়ন, জনকেন্দ্রিক উন্নয়ন উদ্যোগ জোরদার এবং স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধির জন্য উদ্ভাবনী সমাধানের ক্ষেত্রে আমাদের বিশাল অর্জন সুস্বীকৃত।’ তিনি বলেন, ‘ফলে, কোভিড-১৯ মহামারির আক্রমণ সত্ত্বেও আমরা ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত এবং ২১০০ সালের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ বদ্বীপে পরিণত হওয়ার সঠিক পথে আছি।’