ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু পল্লীতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ মামলার চার্জশিটভুক্ত দুই আসামি দেওয়ান আতিকুর রহমান আখি ও আবুল হাসেমকে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আবুল হাসেম নাসিরনগর সদর এবং আখি হরিপুর ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। এ দুজন নাসিরনগর উপজেলা সদরের গৌরমন্দির ভাঙচুর মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি।
চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে নাসিরনগর উপজেলাজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। এছাড়াও মন্দির ভাঙচুর মামলার আসামি দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাও। এর আগে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভায় প্রার্থী চূড়ান্ত করার পর গতকাল মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীদের নাম তালিকা প্রকাশ করা হয়।
হিন্দুপল্লীতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ মামলার দুই আসামি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার খবরে তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে বিব্রত জেলা আওয়ামী লীগও। দলটির শীর্ষ নেতারা বলছেন, আবুল হাসেম ও আতিকুর রহসান আখি যে মন্দির ভাঙচুর মামলার আসামি সেটি গোপন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার বলেন, ‘আমরা জেলা বাছাই কমিটি থেকে তাদের ব্যাপারে আপত্তি দিয়েছিলাম। এরপরও এটি হয়েছে। মনে হয় তাদের মামলার বিষয়টি মনোনয়ন বোর্ডের সভায় উত্থাপিত হয়নি অথবা কেউ গোপন করেছে। কেন্দ্রের দৃষ্টিতে গেলে হয়তো এটি পরিবর্তন হবে’।
প্রসঙ্গগত, ফেসবুকে ইসলাম ধর্ম অবমাননাকর একটি পোস্টের জেরে ২০১৬ সালের ৩০ অক্টোবর নাসিরনগর উপজেলা সদরে হিন্দুপল্লীতে হামলা চালিয়ে মন্দির ও ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করে দুস্কৃতিকারীরা। পরবর্তীতে দুই দফায় হিন্দুদের কয়েকটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। এসব ঘটনায় দায়ের করা মোট ৮টি মামলায় দুই হাজারেরও বেশি মানুষকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে ২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর গৌরমন্দির ভাঙচুর মামলায় নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসেম ও হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আখিসহ ২২৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেয় পুলিশ।