আলোচিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসের সুইস ব্যাংকে তার ৮২ বিলিয়ন ডলার (সাত লাখ কোটি টাকারও বেশি) আটকে আছে দাবি করে জানিয়েছেন, ওই টাকা ফিরে পেলে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু করে দেবেন তিনি। পাশাপাশি পুলিশকেও ৫০০ কোটি টাকা দেবেন। মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদে মুসা বিন শমসের তার এ ইচ্ছের কথা জানান। সেখানে সাড়ে তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
মুসাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটের দিকে ডিবি কার্যালয়ের গেটে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন ডিবির যুগ্ম-কমিশনার হারুন-অর-রশীদ। তিনি বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ভুয়া অতিরিক্ত সচিব আব্দুল কাদেরের বিষয়ে বিকেলে মুসা বিন শমসেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে মুসা বিন শমসের বলেছেন, তার সুইস ব্যাংকে ৮২ বিলিয়ন ডলার আটকে আছে। সেই টাকা পেলে তিনি পুলিশকে ৫০০ কোটি টাকা দিতে চেয়েছেন। এছাড়া তিনি দ্বিতীয় পদ্মা সেতু ও দুদকের ভবনও করে দিতে চেয়েছেন।
ডিবির এ কর্মকর্তা বলেন, মুসা বিন শমসেরকে আমার কাছে রহস্যময় মানুষ মনে হয়েছে। প্রতারক আব্দুল কাদের একজন নাইন পাস লোক, তাকে মুসা বিন শমসের উপদেষ্টা বানালেন কেন? ২০ কোটি টাকার চেক দিলেন কেন? উনি বলেছেন, লাভ দেবেন। কিন্তু উদ্দেশ্য আমরা জানি না। মুসা সাহেব দেখেছেন আব্দুল কাদের বড় বড় লোকের সঙ্গে কথা বলেন। বাস্তবে আব্দুল কাদেরের সঙ্গে উনার অনেক সম্পর্ক রয়েছে।
হারুন-অর-রশীদ বলেন, উনি (মুসা বিন শমসের) কেমন মানুষ আমরা বুঝি না। তবে উনি দায় এড়াতে পারেন না। তার সঙ্গে ভুয়া অতিরিক্ত সচিব আব্দুল কাদের মাঝির যে সম্পর্ক এর দায় তিনি এড়াতে পারবেন না। কারণ উনার সঙ্গে আব্দুল কাদের মাঝির যে হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক, তা দিয়ে বিভিন্ন মানুষকে আব্দুল কাদের মাঝি ঠকিয়েছেন। কাদের মাঝি বলেছেন, তার সঙ্গে আইজিপিসহ বড় বড় মানুষের সম্পর্ক আছে। কিন্তু উনার তো (মুসা বিন শমসের) জিজ্ঞেস করা উচিত ছিল। কিন্তু উনি জিজ্ঞেস করেননি। আব্দুল কাদের মাঝির সঙ্গে উনার একটা যোগসূত্র রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মুসা বিন শমসেরের দাবি তিনি নিজে প্রতারিত হয়েছেন। তিনি নিজেও মামলা করবেন বলেছেন। আমরা সবকিছু তদন্ত করছি। আমরা যেটা করার দরকার সেটাই করবো। তিনি মামলা করলে সেটাও তদন্ত করবো। মুসা বিন শমসের সম্পর্কে হারুন-অর-রশীদ বলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে তিনি অন্তঃসারশূন্য একজন মানুষ। একটা ভুয়া লোক মনে হয়েছে। তার কিছু নেই। তার একটা বাড়ি রয়েছে গুলশানে। সেটাও স্ত্রীর নামে। বাংলাদেশে তার নামে কিছু নেই। তবে উনি মুখরোচক গল্প বলেন। তিনি আমাদের কাছে দাবি করেছেন, এ দেশে যা উন্নয়ন হয়েছে সব তার অবদান। তার সঙ্গে আর কী কথা বলবো? তিনি খামখেয়ালিভাবে কথা বলেছেন। এ কথাগুলো আব্দুল কাদের মাঝি বিক্রি করেছেন। মুসার বডিগার্ড প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হারুন বলেন, আমরা বলে দিয়েছিলাম, ডিবি কার্যালয়ে বডিগার্ড নিয়ে আসা যাবে না। উনার যে বাস্তব অবস্থা এখন দেখলাম তিনি অন্তঃসারশূন্য। তার কোনো কিছুই নেই।