বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, বিশ্বের সব পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা রাখতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে মিউচুয়াল ফান্ড। দেশের পুঁজিবাজারে গত কয়েক বছর ধরে ভালো করছে মিউচুয়াল ফান্ড এবং স্থিতিশীলতায় অবদান রাখছে। আমরা মিউচুয়াল ফান্ডগুলোকে আরও বড় দেখতে চাই। তাদের পারফরম্যান্সে আমরা খুশি। তবে ফান্ডগুলোর প্রচার ও প্রসার একটু কম। সেখানে আরও কাজ করতে হবে।
শনিবার (৯ অক্টোবর) ‘বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ-২০২১’ উপলক্ষে অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ অ্যান্ড মিউচুয়াল ফান্ডস (এএএমসিএমএফ) আয়োজিত এক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। ‘ইনস্টিটিউশনাল রোল ইন সাসটেইনেবল ফাইনান্সিং’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এএএমসিএমএফের সভাপতি ড. হাসান ইমাম। সঞ্চালনায় ছিলেন একাশিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অরুণাষ্ণু দত্ত। আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হোসেন।
এএএমসিএমএফের সভাপতি ড. হাসান ইমাম বলেন, পুঁজিবাজারে চার ধরনের খাতে বিনিয়োগ দেখা যায়। এর মধ্যে মিউচুয়াল ফান্ড ছাড়াও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, করপোরেট প্রতিষ্ঠান ও বৈদেশিক বিনিয়োগ রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা ও টেকসই বিনিয়োগে কার্যকর অবদান রাখছে মিউচুয়াল ফান্ড কোম্পানিগুলো। মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর সিংহ ভাগই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে থাকে। এসব কোম্পানির প্রায় ৯০ শতাংশই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে থাকে। অন্য কোনো খাত পুঁজিবাজারে এত বিনিয়োগ করে না। ফলে মিউচুয়াল ফান্ডগুলো নির্ভরতার প্রতীক হয়ে উঠছে।
গত অর্থ বছরে দেশের মিউচুয়াল ফান্ডগুলো প্রায় ৬০০ কোটি টাকা নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এসব ফান্ড বিনিয়োগকারীদের ভালো ক্যাপিটাল গেইন দিয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদেরও ভালো রিটার্ন দিচ্ছে। এসব বিবেচনায় বিনিয়োগকারীদের জন্য মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। পাশাপাশি দেশের পুঁজিবাজারের টেকসই বিনিয়োগে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। এজন্য মিউচুয়াল ফান্ডের বিকশিত করতে কার্যকর নীতি সহায়তা প্রয়োজন। দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ টেকসই করতে হলে মিউচুয়াল ফান্ডকে আরও সহযোগিতা করতে হবে।
ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আরফান আলী বলেন, দেশের পুঁজিবাজারের টেকসই এবং গুণগত মানের উন্নয়নে আর্থিক খাত এবং মিউচুয়াল ফান্ডগুলোকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। তাহলেই দেশের পুঁজিবাজার আরও বিকশিত হবে। শনিবারের সেমিনারে বক্তারা বলেন, মিউচুয়াল ফান্ড থেকে ইতিমধ্যে বেশ ভালো ডিভিডেন্ড দিয়েছে এবং ভালো ক্যাপিট্যাল গেইন হয়েছে। ভ্যালুয়েশনের দিক থেকে এখনো বেশ অবদান রাখছে। ফলে কম টাকায় বেশি মূল্যের সুযোগ রয়েছে। টেকসই বিনিয়োগের উত্তম পন্থা এখন মিউচুয়াল ফান্ড। ফলে মিউচুয়াল ফান্ডগুলোকে আরও প্রচার করতে হবে। নেতিবাচক কোন কিছু আসলে সেগুলো দূর করতে হবে। এছাড়া খাত-সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আন্ত যোগাযোগ আরও বৃদ্ধি করতে হবে। নতুন নতুন পণ্য ও বিনিয়োগ ক্ষেত্র সৃষ্টি করতে হবে।