আজ বুধবার প্রতীক্ষিত নির্বাচন। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। ভোটের এই লড়াই পেরিয়ে নির্বাচিত হবেন ২৩ জন।
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, এবারের নির্বাচন অন্যবারের মতো হবে না। এখানে কোনো প্যানেল থাকছে না। অন্য নির্বাচনের চেয়ে ভিন্নই হবে। স্থানীয় এক পাঁচতারকা হোটেলে কাউন্সিলরদের নিয়ে এক নৈশভোজেও একই কথা বোর্ড সভাপতির মুখে। এটা সত্য যে, এবারের নির্বাচনে কোনো প্যানেল নেই। তবে বোর্ড সভাপতির আশীর্বাদপুষ্ট প্রার্থী আছেন।
৭ জন এরই মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছেন। তারা হলেন-আ জ ম নাসির ও আকরাম খান (চট্টগ্রাম বিভাগ), শেখ সোহেল এবং কাজী ইনাম (খুলনা বিভাগ), শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল (সিলেট বিভাগ), আলমগীর খান (বরিশাল বিভাগ) এবং অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম (রংপুর বিভাগ)।
আজ নির্বাচন হবে আসলে ১৬ পদে। তবে এবারের নির্বাচনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হলো- ১, ২ এবং ৩; তিন ক্যাটাগরিতেই নির্বাচন হবে। এর মধ্যে বিভাগ ও জেলা পর্যায়ের কাউন্সিলরদের ভোটে যে ১০ পরিচালক নির্বাচিত হবেন, তার ৭ জন ভোট ছাড়া এরই মধ্যে নির্বাচিত। কারণ তাদের বিপক্ষে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। বাকি তিন পদের জন্য ঢাকা আর রাজশাহী বিভাগে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। শেষ পর্যন্ত হয়তো ঢাকা বিভাগেও নির্বাচন নাও হতে পারে।
ঢাকা বিভাগ থেকে মনোনয়ন তুলে ও জমা দিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা প্রত্যাহার না করলেও ৭২ ঘন্টা আগে নির্বাচন কাউন্সিল ও সব কাউন্সিলরদের কাছে চিঠি দিয়ে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন মাদারীপুরের কাউন্সিলর খালিদ হোসেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর নির্বাচন না করার ঘোষণা দিয়েছেন কিশোরগঞ্জের সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু। যেহেতু খালিদ হোসেন ও আশফাকুল ইসলাম টিটু দুজনই নির্ধারিত সময়ের পরে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন, তাই নিয়ম অনুযায়ী ভোট হবে। সেক্ষেত্রে বর্তমান পরিচালক ও জাতীয় দলের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয় এবং তানভির আহমেদ টিটুর (নারায়ণগঞ্জ) বিজয় নিশ্চিত।
অন্যদিকে জেলা ও বিভাগে আরও এক বিভাগে নির্বাচন হচ্ছে, সেটা রাজশাহী বিভাগে। যেখানে আগেরবারের বিনা ভোটে নির্বাচিত সাইফুল আলম চৌধুরী স্বপনের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট।
দুজনার মধ্যে আরও একটি ক্যাটাগরিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। সেখানে মুখোমুখি জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও আগেরবারের পরিচালক গেম ডেভেলপমেন্ট কমিটি চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ সুজন ও নামি কোচ নাজমুল আবেদিন ফাহিম। এদের দুজনকে নির্বাচিত করবেন সাবেক অধিনায়ক, ক্রিকেটার, সার্ভিসেস, সব বিশ্ববিদ্যালয়, সকল শিক্ষা বোর্ড এবং বিকেএসপি ও কোয়াবের ভোটাররা। এখানে ভোটার সংখ্যা ৪৩ জন।
রাজধানী ঢাকার ক্লাব কোটার দিকে সবার দৃষ্টি । সেখানে ৫৭ জন ভোটারের ভোটে নির্বাচিত হবেন ১২ জন। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৬ জন। তারা হলেন-নাজমুল হাসান পাপন (আবাহনী লিমিটেড), গাজী গোলাম মর্তুজা (গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স), নজিব আহমেদ (শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব), মাহবুব উল আনাম ও মাসুদউজ্জামান (মোহামেডান), ওবেইদ রশীদ নিজাম (শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব), সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া (ওল্ড ডিওএইচএস স্পোর্টস ক্লাব), মোঃ সালাহ্উদ্দিন চৌধুরী (কাকরাইল বয়েজ ক্লাব), মুহাম্মদ ইসমাইল হায়দার মল্লিক (শেখ জামাল ক্রিকেটার্স), মোঃ এনায়েত হোসেন সিরাজ (আজাদ স্পোর্টিং ক্লাব), ফাহিম সিনহা (সূর্য তরুণ), ইফতেখার রহমান মিঠু (ফেয়ার ফাইটার্স), মনজুর কাদের (ঢাকা এসেটস), মোহাম্মদ আব্দুর রহমান (মিরপুর বয়েজ), মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম (গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমী), মোঃ মনজুর আলম মনজু (আসিফ শিফা ক্রিকেট একাডেমী)।
এর মধ্যে সদ্য সাবেক হওয়া বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, সাবেক ৬ পরিচালক, এনায়েত হোসেন সিরাজ, মাহবুব আনাম, আহমেদ নজিব, মঞ্জুর কাদের, গোলাম মুর্তজা পাপ্পা ও ইসমাইল হায়দার মল্লিকের জেতার সম্ভাবনা প্রবল। যেহেতু ১৬ প্রার্থীর মধ্যে আগের বোর্ডের আর কেউ নেই, তাই ঢাকার ক্লাব কোটায় বাকি ৫ পদ পূর্ণ হবে নতুনদের দিয়ে।
সেখানে ইফতেখার রহমান মিঠু, প্রয়াত পরিচালক আফজালুর রহমান সিনহার ছেলে ফাহিম সিনহা, বিপিএলের দল ঢাকা ডায়নামাইটসের সিইও ওবেদ নিযাম, সালাউদ্দীন ও মঞ্জুরুল আলম মঞ্জুর পাল্লা ভারি। অন্যদিকে সাইফুল, রফিকুল ইসলাম ও মাসুদুজ্জামানের জেতার সম্ভাবনা খুব কম। নেই বললেই চলে।
নাটকীয় ঘটনা না ঘটলে হয়তো এই ১২ জনকেই ঢাকার ক্লাব কোটার বোর্ডের আগামী ৪ বছরের পরিচালক হিসেবে দেখা যাবে। এদিকে আগামীকালের নির্বাচনে ১৭১ ভোটারের সবাই ভোট দিতে আসবেন না। মোট ৫৬ জন প্রথমবারের মত সংযোজিত পোস্টাল ও ই-ভোটে এরই মধ্যে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। বাকি ৫৬ জন কাল বিসিবি অফিসে এসে সশরীরে ভোট দেবেন।
ওপরে ভোটযুদ্ধে ২৩ পরিচালকের কথা বলা হয়েছে বারবার। তার মানে এই নয় যে, বোর্ড ২৩ জনের। বিসিবির পরিচালক পর্ষদ আসলে ২৫ জনের। ২ জন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কোটায় বিনা ভোটেই আসছেন। তারা হলেন- আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি ও জালাল ইউনুস।