মানবদেহে উষ্ণতা ও স্পর্শের অনুভূতি কীভাবে ছড়ায়, তা নিয়ে গবেষণা করে এ বছর চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন দুই বিজ্ঞানী। তারা হলেন-যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানী ডেভিড জুলিয়াস ও লেবাননের আরডেম পাটাপুটিয়ান। সোমবার নোবেল কমিটি এ ঘোষণা দিয়েছে। কমিটি জানায়, তাপমাত্রা বা স্পর্শ মানবদেহ কীভাবে অনুভব করে তার গবেষণা করে এই দুই বিজ্ঞানী তাপমাত্রা ও স্পর্শের রিসেপ্টর আবিষ্কার করেছেন। তাদের এ আবিষ্কারের আগে এটি ছিল একটি রহস্য। মানবদেহের যে নার্ভ সেন্সরের কারণে আমাদের ত্বক তাপ অনুভব করতে পারে সেই সেন্সরকে শনাক্ত করতে অবদান রেখেছেন জুলিয়াস। অন্যদিকে পাটাপুটিয়ান মানবদেহের কোষে আলাদা চাপ-সংবেদনশীল সেন্সর খুঁজে পেয়েছেন। এই সেন্সরের কারণে দেহ কোনো উদ্দীপনায় সাড়া দিতে পারে। তাদের আবিষ্কারকে কাজে লাগিয়ে ক্রনিক ব্যথাসহ আরও নানা ধরনের রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি বের করার চেষ্টা চলছে।
ডেভিড জুলিয়াস সানফ্রান্সিসকোয় ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক। আর পাটাপুটিয়ান কাজ করেন আমেরিকান স্ক্রিপস রিসার্চ ইনস্টিটিউটে। এ বছর নোবেল পুরস্কারের এক কোটি সুইডিশ ক্রোনার বা ১১ লাখ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ৯ কোটি টাকা) এই দুই বিজ্ঞানী সমানভাবে ভাগ করে নেবেন। এর আগে ২০২০ সালে হেপাটাইটিস-সি ভাইরাস আবিষ্কার এবং এর চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য নোবেল পেয়েছিলেন মার্কিন বিজ্ঞানী হার্ভে জে আল্টার ও চার্লস এম রাইস এবং ব্রিটিশ বিজ্ঞানী মাইকেল হাউটন।
আজ পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হবে। এরপর আগামীকাল রসায়ন, বৃহস্পতিবার সাহিত্য ও শুক্রবার শান্তিতে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে। আগামী ১১ অক্টোবর জানা যাবে অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ীর নাম। নোবেল পুরস্কার প্রবর্তন করেন সুইডিশ বিজ্ঞানী ও উদ্ভাবক আলফ্রেড নোবেল। আলফ্রেড তার জীবদ্দশায় ডিনামাইটসহ ৩৫৫টি উদ্ভাবন করেন। এসবের মাধ্যমে প্রচুর অর্থবিত্তের মালিক হয়েছিলেন তিনি। অর্জিত সব অর্থ দান করে ১৮৯৫ সালে একটি উইল করেন তিনি। যার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯০১ সাল থেকে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাশাস্ত্র, সাহিত্য এবং শান্তি-এই পাঁচটি বিষয়ে নোবেল পুরস্কার প্রচলন করা হয়। পরে ১৯৬৯ সালে অর্থনীতি বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয়। নোবেল পুরস্কার বিজয়ীকে পদক, সনদ ও মোটা অঙ্কের অর্থ দেওয়া হয়। ১৯৮০ সালের আগ পর্যন্ত নোবেল বিজয়ীরা যে পদক পেতেন, সেটা ছিল ২৩ ক্যারেট স্বর্ণের। এরপর থেকে ১৮ ক্যারেট সবুজ স্বর্ণের ধাতবের ওপর ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের প্রলেপ দেওয়া পদক দেওয়া হচ্ছে। আর অর্থের পরিমাণ এক কোটি সুইডিশ ক্রোনার।