কানাডার ৪৪তম পার্লামেন্ট নির্বাচন নিয়ে দেশটির সরকারি সংবাদমাধ্যম বলছে, দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোই এই নির্বাচনে জয় পেতে চলেছেন। সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, কানাডার সর্বত্রই ভোটগ্রহণ প্রায় শেষ। ইতোমধ্যেই গণনা শুরু হয়েছে। তবে তা একেবারেই প্রাথমিক স্তরে আছে। অবশ্য নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পোস্টাল ব্যালট গণনার কাজ মঙ্গলবারও চলবে। তাই কে জিতছেন, তা খুব তাড়াতাড়ি জানা যাবে না।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যবর্তী এই নির্বাচনে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারেন ট্রুডো। কিন্তু নির্বাচনের আগের বিভিন্ন জরিপ বলছে, কোনো দলের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা কম। তাই এবারের নির্বাচনকে জাস্টিন ট্রুডোর জন্য অগ্নিপরীক্ষা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
২০১৫ সালে কানাডার সাবেক জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী পিয়ের ট্রুডোর ছেলে জাস্টিন ট্রুডো বিপুল ভোটে জিতেছিলেন। চার বছর পর ২০১৯ সালে তিনি আবার জিতেছিলেন ঠিকই, কিন্তু আসন সংখ্যা সেসময় অনেক কমে যায়। ২০০১ সালে ইউনিভার্সিটি পার্টির কিছু ছবি সেসময় সামনে আসার ফলে আধুনিক, বৈষম্য বিরোধী নেতা হিসাবে তার ভাবমূর্তি ধাক্কা খায়।
২০১৯ সালের নির্বাচনের পর পরবর্তী নির্বাচনটি ২০২৩ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর আগেই মধ্যবর্তী নির্বাচনের ঘোষণা দেন ট্রুডো। মূলত চলমান করোনা মহামারি নিয়েই ট্রুডো একটি গণভোট চাইছেন। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কানাডায় ৭৩ দশমিক চার শতাংশ মানুষকে দুই ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় উত্তর আমেরিকার এই দেশটি টিকাদানের ক্ষেত্রে একেবারে প্রথম সারিতে রয়েছে।
নির্বাচনের প্রচারে বারবার উঠে এসেছে করোনা মহামারির প্রসঙ্গ, কীভাবে করোনার মোকাবিলা করা যাবে সেই প্রসঙ্গও উঠে এসেছে। ট্রুডো চেয়েছেন, দেশের সব মানুষ দ্রুত ভ্যাকসিন নিয়ে নিক। আর তার প্রধান প্রতিপক্ষ কনজারভেটিভ পার্টির নেতা এরিন ওটুলের মত হলো, দ্রুত করোনা পরীক্ষার ওপর বেশি জোর দেওয়া উচিত।
সোমবার ভোটগ্রহণের আগে শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ভোটারদের বিভক্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন জাস্টিন ট্রুডো ও এরিন ওটুল। সোমবার ট্রুডো টুইট করে বলেন, বাচ্চাদের সুন্দর ভবিষ্যতের স্বার্থে ভোট দিন। সেজন্যই আপনাদের ভোট এতটা মূল্যবান। অন্যদিকে এরিন বলেছেন, ‘কর সংস্কার দরকার, চীনের বিরুদ্ধে আরও আক্রমণাত্মক নীতি নেওয়া দরকার, আর কানাডার মানুষের জীবন আরও ভালো হওয়া দরকার।’
কানাডায় এবারের নির্বাচনে দেশটির পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্সের ৩৩৮ আসনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২ হাজার ১০ জন প্রার্থী। এর মধ্যে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত দলের প্রার্থী ১ হাজার ৯১৯ জন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ৯১ জন।