অনুপ পোদ্দার ওরফে মনির খান (৪১)। তার টার্গেট ছিল স্বামী পরিত্যক্তা বা তালাক প্রাপ্ত নারীরা। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত ও বেসরকারি চাকরিজীবী। সুস্থ স্বাভাবিক জীবনের আড়ালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুসলিম পরিচয়ে, ভুয়া ঠিকানা ও অন্যের ছবি ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে পর্নোগ্রাফি ও অর্থ আত্মসাতের কারবার চালিয়ে আসছিলেন। এই প্রতারককে গত সোমবার রাজধানীর এ্যালিফেন্ট রোড থেকে র্যাব গ্রেপ্তার করেছে।
র্যাব-৪ এর অপারেশন অফিসার এএসপি মো. জিয়াউর রহমান জানান, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া আসামির প্রকৃত নাম অনুপ পোদ্দার। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত ও বেসরকারি চাকরিজীবী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেকে মুসলিম পরিচয়ে, ভুয়া ঠিকানা ও অন্যের ছবি ব্যবহার করে ‘মনির খান ও হারুন’ নামে ফেক আইডি খুলেন। এরপর বিভিন্ন পাত্র/পাত্রী চাই, ম্যারেজ মিডিয়ার ফেসবুক গ্রুপ থেকে স্বামী পরিত্যক্তা বা তালাকপ্রাপ্ত মেয়েদের টার্গেট করেন। তিনি আরও জানান, এরপর ধীরে ধীরে সম্পর্কের গভীরতার একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখান। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘনিষ্ঠতার একপর্যায়ে তাদের ইমোশনকে ব্যবহার করে বিভিন্ন স্পর্শকাতর ছবি ও ভিডিও গোপনে ধারণ করে শুরু করেন ব্ল্যাকমেইল।
র্যাব-৪ সূত্রে জানা গেছে, প্রথম পর্যায়ে তিনি নারীদের বিভিন্ন হোটেলে দেখা করার কথা বলেন এবং অবৈধ বা অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হলে গোপনে ধারণ করা ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ৫-৬ লাখ টাকা দাবি করতেন। এদিকে সমাজে লোকচক্ষুর ভয়ে বাধ্য হয়ে অনেকেই তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন এবং কেউ কেউ অল্প টাকা দিয়ে রেহাই পেয়েছেন।
র্যাব জানায়, গোপনে ধারণকৃত নারীদের স্পর্শকাতর ভিডিও ও ছবি এবং বিভিন্ন পর্নোভিডিও তার দ্বারা পরিচালিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গোপন গ্রুপে পোস্ট ও শেয়ার করতেন। এ ছাড়া ২০০ এর অধিক ভুক্তভোগী নারীর ছবি ও ভিডিও সম্বলিত তার মোবাইলটি জব্দ করা হয়েছে। তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলে।