যেতে হবে মাস্ক পরে
করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে মাস্ক পরার গুরুত্ব তুলে ধরে আসছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পর সে বিষয়ে সচেতন থাকতে শিক্ষক, কর্মচারী, অভিভাবকসহ সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দীপু মনি। তিনি বলেন, “মাস্ক ছাড়া কেউ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসবে না এবং সবার মাস্ক পড়তে হবে। ছোট বয়সি শিক্ষার্থীর খেয়াল রাখতে হবে, যেন মাস্কে কোনো সমস্যা না হয়।” বাসায় কেউ অসুস্থ থাকলে সেই বাসার শিশুকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না পাঠানোর পরামর্শ দেন তিনি। “বাসায় কেউ অসুস্থ হলে স্কুলে পাঠাবেন না। শিক্ষকেরা নিশ্চিত করবেন তাপমাত্রা ও উপসর্গ চেইক করা।” দীপু মনি বলেন, “প্রতিটি স্কুল নজরদারি করা হবে এবং সংক্রমণ বাড়ার কারণ আছে মনে হলে প্রয়োজন হলে তা বন্ধ করা হবে।”শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রাত্যহিক সমাবেশ এখন হবে না। তবে সীমিত পরিসরে খেলাধুলা চলতে যেন পারে, সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মহামারীর কারণে দেড় বছর ধরে বন্ধ থাকা সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলবে, তারই প্রস্তুতি নিচ্ছে মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি স্কুলের কর্মীরা।
ক্লাস হবে যেভাবে
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “প্রথম যখন ক্লাস শুরু হবে ২০২১ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং যারা আগামী বছর এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা দেবে, তারা প্রতিদিন ক্লাস করবে। “বাকি ক্লাসগুলো প্রাইমারিতে ওয়ান থেকে ফোর এবং ৬ থেকে ৯ম শ্রেণি সপ্তাহে একদিন ক্লাস করবে।” ২০২১ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ক্লাস শেষ হলে সেক্ষেত্রে দশম শ্রেণি এবং একাদশ শ্রেণির ক্লাস টানা চলবে। কোনো ক্লাসে শিক্ষার্থী বেশি হলে প্রয়োজনে বিভক্ত করে ভিন্ন শ্রেণি কক্ষে নিয়ে ক্লাস নেওয়া হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, শুরুতে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা করে ক্লাস চলবে। তবে পর্যায়ক্রমে সময়সীমা বাড়ানো হবে।
যেসব শ্রেণির ক্লাস সপ্তাহে এক দিন চলবে, তাও পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে বলে দীপু মনি জানান। তিনি বলেন, পিইসি, জেএসজি, জেডিসি পরীক্ষা এবং বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতি থাকবে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রাক প্রাথমিক স্তরের ক্লাস শুরুর বিষয়ে মন্ত্রী কিছু বলেননি। দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটার পর গত বছর ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। কয়েক দফা উদ্যোগ নেওয়া হলেও পরিস্থিতি ‘অনুকূলে’ না আসায় দফায় দফায় ছুটি বাড়ানো হয়। দৈনিক সংক্রমণের হার ৫ শতাংশে নামলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলবে বলে আগে জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। মাঝে সংক্রমণের হার ৩২ শতাংশেও উঠেছিল। কিন্তু এখন সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে।
৫ শতাংশে না নামলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিচ্ছে সরকার। আর সেজন্যই রোববারের বৈঠকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, আইইডিসিআরের প্রতিনিধিকেও রাখা হয়। কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বৈঠকে ছিলেন।
এছাড়া ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম।