আজ বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৫০তম শাহাদাতবার্ষিকী । যশোরে এই দিনে ১৯৭১ সালের গোয়ালহাটি গ্রামে তিনি শহীদ হন। পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে লড়াই করার সময় সঙ্গীদের জীবন ও অস্ত্র রক্ষা করতে গিয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরে শার্শা উপজেলার কাশীপুরে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
নড়াইলের চণ্ডিবরপুর ইউনিয়নের মহিষখোলা গ্রামে ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নূর মোহাম্মদ শেখ জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৮ সালে এই গ্রামের নাম পরিবর্তন করে ‘নূর মোহাম্মদ নগর’ রাখা হয়। নূর মোহাম্মদ ট্রাস্ট ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নূর মোহাম্মদ নগরে দিনব্যাপী কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে কোরআনখানি, স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা অর্পণ, পুলিশের সশস্ত্র সালাম এবং দোয়া মাহফিল।
১৯৫৯-এর ১৪ মার্চ পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলস বা ইপিআর-এ নূর মোহাম্মদ শেখ যোগদান করেন। দীর্ঘদিন দিনাজপুর সীমান্তে চাকরি করে ১৯৭০ সালের ১০ জুলাই নূর মোহাম্মদকে দিনাজপুর থেকে যশোর সেক্টরে বদলি করা হয়। এরপর তিনি ল্যান্স নায়েক পদে পদোন্নতি পান। ১৯৭১ সালে যশোর অঞ্চল নিয়ে গঠিত ৮নং সেক্টরে স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগদান করেন। যুদ্ধ চলাকালীন যশোরের শার্শা থানার কাশিপুর সীমান্তের বয়রা অঞ্চলে ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদা’র নেতৃত্বে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন।
১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোর জেলার গোয়ালহাটি ও ছুটিপুরে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে তিন সঙ্গীকে বাঁচাতে গিয়ে তিনি নিজের জীবন উৎস্বর্গ করার অনন্য নজির স্থাপন করেন। নূর মোহাম্মদ যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিপুর সীমান্তের বয়রা অঞ্চলে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে দেশ শত্রুমুক্ত করেন।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে চরম সাহসিকতা আর অসামান্য বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ যে সাতজন বীরকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান “বীর শ্রেষ্ঠ” উপাধিতে ভূষিত করা হয় তিনি তাদের অন্যতম।