৯ আগস্ট, মিরপুর। অস্ট্রেলিয়া ৬২ রানে অলআউট। টি ২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অসিদের সবচেয়ে কম রানে অলআউট হওয়ার লজ্জা। বাংলাদেশ জয়ী ৬০ রানে। ওই ম্যাচ দিয়ে দরজা বন্ধ হয়েছিল বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজের। ১ সেপ্টেম্বর, মিরপুর। ৬০ সংখ্যাটা ফিরে এলো ২৩ দিন পর। নিউজিল্যান্ড এবার ৬০ রানে অলআউট। টি ২০ ক্রিকেটে কিউইদের সর্বনিম্ন রানের ইনিংস। বাংলাদেশ জয়ী সাত উইকেটে। ৩০ বল বাকি থাকতে। কিউইদের বিপক্ষে এই ফরম্যাটে প্রথম জয়। অস্ট্রেলিয়া হোক কিংবা নিউজিল্যান্ড-মিরপুরের উইকেট যেন তাদের জন্য ‘বারমুডা ট্রায়াঙ্গল’। বুধবার কিউইরা সেখানে গোত্তা খেল যাচ্ছেতাইভাবে। আর ম্যাথু ওয়েড, মিচেল মার্শরা পড়শিদের বেহাল দশা দেখে হয়তো দেশে বসে মুচকি হাসছেন, মিরপুর যেন উইকেটের সমুদ্দুর!
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে যে কোনো ফরম্যাটে প্রথমবারের মতো সিরিজ জয়ের সুখস্মৃতি মলিন হতে না হতেই বাংলাদেশের মুকুটে যোগ হলো আরেকটি পালক। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি ২০-তে প্রথম জয়। আগের ১০ ম্যাচে ১০ হারে ফুল স্টপ পড়ে গেল। তা-ও যেনতেন জয় নয়। ১৭ ওভারেরও কমে অতিথিদের ইনিংস মাত্র ৬০ রানে গুটিয়ে দিয়ে তিন উইকেট খুইয়ে ১৫ ওভারেই মাহমুদউল্লাহদের জয়োল্লাস। বাংলাদেশ টি ২০ অধিনায়কের জন্য এই জয় তাই মহার্ঘ্যতুল্য। ‘ওদের বিপক্ষে কয়েকটি ম্যাচ হারার পর আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রয়োজন ছিল। এই সাফল্যের মূল উৎস বোলাররা। খুব বেশি জোর দেয়নি ওরা উইকেট নিতে। এটাই গুরুত্বপূর্ণ,’ ম্যাচ শেষে বলেছেন মাহমুদউল্লাহ। ম্যাচসেরা সাকিব আল হাসানের কথায়ও একই সুর, ‘সিরিজের প্রথম ম্যাচ জেতাটা খুবই ভালো অনুভূতি। বিশেষ করে এজন্য যে, এই ফরম্যাটে আমরা এর আগে কখনো নিউজিল্যান্ডকে হারাতে পারিনি। এই জয় আমাদের আÍবিশ্বাস বাড়িয়ে দেবে।
নিউজিল্যান্ডকে গুঁড়িয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ এগিয়ে গেল ১-০ তে। একই ভেন্যুতে আগামীকাল দ্বিতীয় টি ২০। টি ২০ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ড যে দলটা পাঠাবে, এই দল তার চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা। টসে জিতে টম ল্যাথামের ব্যাট করার সিদ্ধান্ত এবং টি ২০ ক্রিকেটে তাদের সর্বনিম্ন সংগ্রহ ৬০ রানে অলআউট হওয়ার লজ্জার পর নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের প্রথম জয়। মোস্তাফিজুর রহমান (৩/১৩) ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের (২/৭) পেস আক্রমণ এবং নাসুম আহমেদ (২/৫) ও সাকিবের (২/১০) ঘূর্ণি বলে ঘায়েল কিউইরা। দুই অঙ্কের রান শুধু দুজনের-অধিনায়ক টম ল্যাথাম ও কোল ম্যাককনকি। দুজনই সমান ১৮ রান করেন যথাক্রমে ২৫ ও ২৪ বল খেলে। বাকিদের রান পাশাপাশি সাজালে বড় জোর টেলিফোন নম্বর হবে।
৬১ তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশও শুরুতে ধাক্কা খেয়েছিল। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে মোহাম্মদ নাঈম ও তৃতীয় ওভারের পঞ্চম বলে লিটন দাস বিদায় নেন। স্বাগতিকরা সাত রানে হারায় দুই উইকেট। ম্যাচ সর্বোচ্চ ২৫ রান (৩৩ বলে) করা সাকিব আউট হন দলকে ৩/৩৭-এ রেখে। এরপর দুই ভায়রা ভাই মুশফিকুর রহিম (১৬*) ও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ (১৪*) ৩১ বলে ২৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে জয়ের তরী তটে ভেড়ান। বল হাতে চার ওভারে ১০ রান দিয়ে দুই উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতে ৩৩ বলে ২৫ রান করার পুরস্কারস্বরূপ ম্যাচসেরা হন সাকিব। টি ২০ বিশ্বকাপের আগে এটাই বাংলাদেশের শেষ সিরিজ। অথচ মিরপুরের উইকেট বিশ্বকাপের সম্ভাব্য উইকেটের পুরো বিপরীত। এই উইকেটে খেলে বিশ্বকাপের জন্য কতটা প্রস্তুত হওয়া যাবে সেই প্রশ্ন থেকেই যায়।