ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে সরকারের নির্মিত মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পেশ ইমাম নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ এনে আদালতে ইউএনওসহ ৭ জনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) মো. শফিকুল ইসলাম নামে একজন চাকুরী প্রার্থী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যুগ্ম জেলা জজ (প্রথম) আদালতে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে ইমাম হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষক মো. মেজবাহ উদ্দিনকে। এছাড়া পদাধিকার বলে নিয়োগ কমিটির প্রধান ও বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফিল্ড অফিসার নূরুল ইসলাম, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) রাবেয়া আফসার সায়মা, সহকারি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আল মামুন, উপজেলার আউলিয়ানগর সিনিয়র মাদরাসার অধ্যক্ষ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজহারে অভিযোগ করা হয়, লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ তালিকার ছয় নম্বরে থাকা মো. মিছবাহ উদ্দিনকে নিয়োগ দেয়া হয়। নিয়োগের জন্য যেসব অভিজ্ঞতা প্রয়োজন সেগুলো মেছবাহ উদ্দিনের নেই। পাশাপাশি তিনি মহেশপুর উচ্চ বিদ্যালয় নামে একটি এমপিওভুক্ত স্কুলের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। এমপিও নীতিমালা ২০২১ অনুসারে তিনি মডেল মসজিদে নিয়োগ পেতে পারেন না।
জানা যায়, মডেল মসজিদে পেশ ইমামসহ চারজনের নিয়োগ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পেশ ইমাম পদে ৪০ জনের আবেদন জমা পড়ে। এদের মধ্যে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন ১৮ জন। ২৩ জুন লিখিত পরীক্ষা শেষে ৭ জন উত্তীর্ণ হওয়ার কথা জানিয়ে নোটিশ দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কে.এম. ইয়াসির আরাফাত। পরে তালিকার ৭ নম্বরে থাকা মিছবাহ উদ্দিনকে গত ১২ আগস্ট এক আদেশের মাধ্যমে ইমাম হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে শফিকুল ইসলামের দায়ের করা মামলার আইনজীবী মো. তানবীর ভূইয়া গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানান, আদালতের বিচারক মো. সারোয়ার আলম মামলাটি আমলে নিয়েছেন। সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূতভাবে এ নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আশা করি মামলার বাদি ন্যায় বিচার পাবেন। মামলার বাদি মো. শফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ২৩ জুন প্রকাশিত লিখিত পরীক্ষার উর্ত্তীণের তালিকায় মিছবাহ্ উদ্দিনের নাম ছয় নম্বরে থাকলেও গত ১২ আগস্ট তাকে নিয়োগ দেয়া হয়। নিয়োগের বিপরীতে চাওয়া নিয়োগের কোন যোগ্যতাও ওই ব্যক্তির নেই। স্কুল চলাকালীন সময়ে তার পক্ষে মসজিদের কার্যক্রম পরিচালনাও করাও সম্ভব নয়। ফলে আইন ও নীতিগত কারণে এই নিয়োগটি অবৈধ।
এই ব্যাপারে মামলার আসামী ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফিল্ড অফিসার মো. নূরুল ইসলাম মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে জানান, এমপিওভুক্ত শিক্ষককে নিয়োগ দেয়া যাবে কি-না সে বিষয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে কোনো নির্দেশনা ছিলো না। মামলার কপি না পাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না। তিনি এ বিষয়ে নিয়োগ সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের সাথে কথা বলতে বলেন।
তবে বিজয়নগরের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্বে থাকা সহকারি কমিশনার (ভূমি) রাবেয়া আফসারের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয় নি। সন্ধ্যা সোয়া ছয়টায় মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি একটি অনুষ্ঠানে থাকায় কথা বলেন। পরে পৌনে সাতটা থেকে একাধিকবার কল করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।