আজ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ৪৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। ১৯৭৮ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর গঠিত হয় দলটি। গত এক যুগ ধরে প্রতিকূল সময় পার করছে বিএনপি। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারারুদ্ধ হওয়ার পর থেকে দলের অবস্থা অনেকটা নাজুক হয়ে পড়ে। তিনি সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্ত সাপেক্ষ মুক্তি পেলেও অসুস্থতা ও বিধিনিষেধের বেড়াজালে এখনো সক্রিয় হতে পারেননি।
দলের নেতারা বলছেন, দুই ইস্যু নিয়ে তৈরি হয়েছে বিএনপির ‘রোডম্যাপ’। বেগম খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তি এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সরকারকে বাধ্য করতে কার্যকর আন্দোলন গড়ে তোলা। এজন্য সরকার বিরোধী দলগুলোতে থাকা সমমনাদের নিয়ে বৃহত্ জোট গড়ারও চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে হটাতে হলে শুধু বিএনপির ঐক্য নয়, জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন। জোটবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামা ছাড়া কোনও বিকল্প নেই। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, বিএনপির নেতৃত্বে জোট হলেও নেতৃত্ব বিএনপির হাতেই থাকবে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, সরকার দেশ চালাতে ব্যর্থ। ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে আসন্ন নির্বাচন নিয়েও ষড়যন্ত্র চলছে। বিএনপি এই সরকারের অরাজকতার বিরুদ্ধে, সর্বদলীয় জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। বৃহত্তর ঐক্য গড়েই কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে বিএনপি। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে আমাদের অঙ্গীকার হবে আন্দোলনের মাধ্যমে হারানো ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা এবং বাক-ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও জনগণের মানবিক মর্যাদা সুরক্ষা করা। আমাদের ৩৫ লক্ষ নেতাকর্মী মিথ্যা মামলায় জর্জরিত। পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। তবুও থেমে থাকেনি বিএনপি’র অগ্রযাত্রা। বর্তমানে সরকারের সময়ে রাজপথের কোনো আন্দোলনে বিএনপির সাফল্য নেই। প্রায় সব ছোট বড় নেতার নামেই আছে মামলার বোঝা। খালেদা জিয়ার নামে মামলা আছে ৩৭ টি।
এমন রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে বিএনপি আজ ৪৩ তম প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করছে। করোনাভাইরাসের ধাক্কা সামলে ফের মাঠে ফিরতে চায় বিএনপি, ভার্চুয়াল রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে চায়। ইতিমধ্যে নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসছে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। করোনাভাইরাস মহামারীর প্রেক্ষাপটে আজ বুধবার বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হবে সীমিত পরিসরে। সকালে দলের কেন্দ্রীয় ও জেলা কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন, শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।