স্বাধীনভাবে ব্যাংক চালাতে চান বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা (এমডি)। তারা মনে করেন, আমানত ও ঋণের সুদহার বাজার ব্যবস্থাপনা অনুযায়ী পরিচালিত হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক যদি সুদের হার বেঁধে দেয়, তাহলে ব্যাংক পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়ে। সম্প্রতি আমানতে সুদের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনা দেয় যে মেয়াদি আমানতের সুদের হার মূল্যস্ফীতির সুদের হারের নিচে হতে পারবে না।
বর্তমানে মূল্যস্ফীতির সাড়ে ৫ শতাংশের মতো। অর্থাৎ, আমানতের সুদের হারও হবে সাড়ে ৫ শতাংশ। গতকাল বুধবার (১১ আগস্ট) বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর এমডিদের ব্যাংকার্স সভায় এ দাবি করেন এমডিরা। তারা বলেন, বাজারের চাহিদা অনুযায়ী ঋণের সুদহার কমে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৭ শতাংশও ঋণ দিতে হচ্ছে। এটা বাজার অর্থনীতির নিয়ম অনুযায়ীই হয়েছে। অন্যদিকে আমানতের সুদহার যদি সাড়ে ৫ শতাংশে বেঁধে দেওয়া হয়, তাহলে তহবিল ব্যবস্থাপনা ও অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে ব্যাংক চালানোই কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে। কারণ বেশির ভাগ ব্যাংকেরই ব্যক্তি আমানত ও মেয়াদি আমানত ৩০ শতাংশের বেশি। অন্যদিকে এখন ব্যাংকগুলো মানুষের দোরগোড়ায় যাচ্ছে। ব্রাঞ্চ ব্যাংকিং বা ক্ষুদ্র পর্যায়ে কার্যক্রম চালাতে ব্যাংকের খরচ এখন বেশি হচ্ছে। এজন্য আমানতে যদি সুদ বেশি দেওয়া লাগে, তাহলে ব্যাংক লোকসান করবে। এমন পরিস্থিতিতে সুদের হার নির্ধারণের প্রজ্ঞাপন যাতে বাস্তবায়ন না করা লাগে, এমন আবদার করেছেন ব্যাংকগুলোর এমডিরা।
জানা গেছে, ২০২০ সালে ব্যাংকগুলো ১০ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকার নিট মুনাফা করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার আলোকে এর ১ শতাংশ হিসাবে ১০৮ কোটি টাকা বিশেষ সিএসআর করতে হচ্ছে। এ বিষয়ে অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রণোদনার আওতায় বড় শিল্পে ৩৩ হাজার কোটি টাকা এবং সিএমএসএমই খাতের ২০ হাজার কোটি টাকার নতুন বরাদ্দ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া সিএমএসএমই খাতে প্রথম বছর ১৫ হাজার ৩৮৭ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে, যা মোট লক্ষ্যমাত্রার ৭৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এক্ষেত্রে শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনকারী ১৬টি ব্যাংক ও পাঁচটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে আজকের সভা থেকে প্রশংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। আর ৪০ শতাংশের কম বিতরণ করা ব্যাংকগুলোকে কারণ দর্শানোর নোটিশের বিষয়টি উত্থাপন করা হয়।