রাজশাহীতে যখন দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও অনেক মানুষ টিকা পাচ্ছেন না। ঠিক তখন সরকারি বাসভবনে বসেই করোনার টিকা নিলেন জেলার তানোর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশীদ ময়না। মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) দুপুরে তিনি তানোর উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থিত সরকারি বাসভবনের নিচতলায় বসে করোনার দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী গিয়ে তার শরীরে টিকা দেন।
তৃতীয় শ্রেণির ওই কর্মচারীর নাম মো. নিশান। তিনি তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুটার। স্টোর থেকে কেন্দ্রে টিকা নিয়ে যাওয়াই নিশানের কাজ। তবে তিনি টিকা নিয়ে গিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের শরীরে প্রয়োগ করে আসেন। তানোর উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশীদ ময়না উপজেলা যুবলীগ সভাপতি। আর পুটার নিশানও যুবলীগ করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসায় গিয়ে টিকা প্রয়োগ করেন তিনি।
মঙ্গলবার রাতে জামিল রহমান নামের এক যুবক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই ছবি দিলে তা ভাইরাল হয়। তবে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ফোন করা হলে ফোন ধরেননি তানোর উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশীদ ময়না। এ বিষয়ে রাজশাহীর তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ডা. বার্নাবাস হাঁসদাক জানান, নিশান একজন পুটার। সে কোনোভাবেই কারও শরীরে টিকা প্রয়োগ করতে পারে না। তার কোনো প্রশিক্ষণও নেই। তার টিকা প্রয়োগ করা ঠিক হয়নি।
আর উপজেলা চেয়ারম্যানকে বাসায় গিয়ে টিকা প্রয়োগ প্রশ্নে তিনি সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। তবে রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার বলেন, এমন কোনো ঘটনা তার জানা নেই। খোঁজ নেবেন, তারপর বক্তব্য দিতে পারবেন। এর আগে চট্টগ্রামে নিজ ঘরে বসে টিকা নেন এক ব্যক্তি। সেই ছবি তিনি ফেসবুকে শেয়ারের পর তা ভাইরাল হয়। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হলে পরে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ নিয়ে সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়। এতে তিনজনের বিরুদ্ধে ‘সরকারি টিকা আত্মসাৎ করে অবৈধভাবে ব্যবহারের’ অভিযোগ আনা হয়। পরে বাসায় গিয়ে টিকা দেওয়ার ঘটনায় জড়িত স্বাস্থ্যকর্মী বিষু দে’কে চাকরিচ্যুত করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। এছাড়া ঘটনা তদন্তে গঠন করা হয়েছে পাঁচ সদস্যের কমিটিও।