রফতানির ঋণাত্মক সূচকে চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছর শুরু করল বাংলাদেশ। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রফতানি কমেছে সোয়া ১১ শতাংশ, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ কম। মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ইপিবি’র তথ্যানুসারে, জুলাইয়ে বিভিন্ন পণ্যের মোট রফতানি হয়েছে ৩৪৭ কোটি ৩৪ লাখ মার্কিন ডলার। যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৭২ কোটি ৯০ মার্কিন ডলার। রফতানি কমেছে ২৫ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। আগের বছর একই সময়ে রফতানির পরিমাণ ছিল ৩৯১ কোটি ৯ লাখ মার্কিন ডলার। সেই হিসাবে প্রবৃদ্ধি কমেছে ১১ দশমিক ১৯ শতাংশ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুলাই মাসে সবচেয়ে রফতানি কমেছে বিল্ডিং তৈরির কাঁচামাল রফতানিতে। এখাতে শতভাগ রফতানি কমেছে। এরপরেই রয়েছে চামড়াজাত পণ্য। এ খাতে রফতানি কমেছে ৪৩.৫৭ শতাংশ। এরপরের অবস্থান পাট ও পাটজাত দ্রব্যের। এই খাতে ৪১.২৯ শতাংশ রফতানি কমেছে।
রফতানিকারকরা বলছেন, করোনার ধাক্কায় গতবছরের এপ্রিলে শিল্পকারখানা উৎপাদন প্রায় বন্ধ ছিল। আবার অনেক বিদেশি ক্রেতা বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ক্রয়াদেশ বাতিল করায় রফতানি তলানিতে নেমে গিয়েছিল। এরপর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মহামারির কিছুটা উন্নতি হয়। ইউরোপ ও আমেরিকার অর্থনীতি সচল হতে শুরু করে। বাতিল হওয়া ক্রয়াদেশ প্রত্যাহারের পাশাপাশি আসতে থাকে নতুন পণ্যের অর্ডার। এসব বিবেচনায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিধিনিষেধ জারি হলেও সচল রাখা হয়েছে শিল্পকারখানা। এ কারণে রফতানি বাড়ে। তবে করোনা মহামারি মোকাবিলায় আরোপিত কঠোর বিধিনিষেধ এবং ঈদুল আজহার কারণে টানা ১২ দিন বন্ধ থাকার প্রভাব পড়েছে রফতানিমুখী শিল্পে।
যদিও বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে (জুলাই-জুন) ১৫ দশমিক ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। গত অর্থবছরে ৩ হাজার ৮৭৫ কোটি ৮৩ লাখ (৩৮ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ। এ আয় তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। তবে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ কম। গত অর্থবছরের রফতানি আয়ের লক্ষ্য ছিল ৪১ বিলিয়ন ডলার।
এর আগে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৩ হাজার ৩৬৭ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি করেছিল বাংলাদেশ। তার আগের বছর রফতানি হয়েছিল ৪ হাজার ৫৩ কোটি ডলারের পণ্য।