নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার খাজুরা দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির দ্বন্দ্বের জেরে পুরাতন কমিটির সভাপতি ও সদস্যরা জোর করে বিদ্যালয়ের রেজুলেশন বইসহ বিভিন্ন কাগজপত্র ছিনিয়ে নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে নতুন তালা লাগানোর ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বিকেলেই সেনা বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত আগের কমিটির সভাপতিসহ চার সদস্যকে আটক করেছে।
সোমবার (২৬ মে) নলডাঙ্গা উপজেলার খাজুরা এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে।
আটককৃতরা হলেন- খাজুরা দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের নিয়মিত কমিটির সভাপতি একই গ্রামের বাসিন্দা হযরত আলী, অভিভাবক সদস্য মো. রুস্তম আলী, রহিদুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান।
প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্টের পর সারাদেশের মতো এই বিদ্যালয়েও ছয় মাসের জন্য এডহক কমিটি গঠন করা হয়। পরে সরকার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের ঘোষণা দিলে নির্বাচনের মাধ্যমে ৫ ডিসেম্বর নিয়মিত কমিটি গঠন করা হয়। গত ২৭ এপ্রিল সরকার আবারও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পূর্ণাঙ্গ কমিটি বিলুপ্ত করে এডহক কমিটি গঠনের ঘোষণা দেয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন এডহক কমিটি গঠনের কার্যক্রম শুরু করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আগের কমিটির সভাপতি হযরত আলী, অভিভাবক সদস্য মো. রুস্তম আলী, রহিদুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান, অহিদুর রহমান ও মিজানুর রহমান এবং জনৈক মাহমুদুর রহমান সোমবার দুপুরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে গিয়ে জোর করে আলমারি খুলে বিদ্যালয়ের রেজুলেশন বই, নোটিশ বই ও বিদ্যালয়ে রাইটিং প্যাডসহ বিভিন্ন কাগজপত্র ছিনিয়ে নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে নতুন একটি তালা লাগিয়ে দিয়ে চলে যায়। তাৎক্ষণিক প্রধান শিক্ষক বিষয়টি নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শিক্ষা অফিসার ও থানা পুলিশকে জানান। পরে খবর পেয়ে বিকেলেই সেনা সদস্যরা অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত আগের কমিটির সভাপতিসহ চার সদস্যকে আটক করেছে। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সন্ধ্যার পরে নলডাঙ্গা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছয়জনের বিরুদ্ধে নলডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।
নলডাঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয় কমিটির একটি পক্ষ। এ ঘটনায় সেনাবাহিনী চারজনকে আটক করে সন্ধ্যার পরে নলডাঙ্গা থানায় হস্তান্তর করেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।