বাংলাদেশ বল পজেশন, আক্রমণে পিছিয়ে থাকলেও ম্যাচের সেরা মুহূর্তটি অবশ্যই তপুর গোল। ডিফেন্ডার হয়েও তিনি অসাধারণভাবে গোল করেছেন। বক্সের মধ্যে বল পেয়ে দুর্দান্তভাবে রিসিভ করে শরীর ঘুরিয়ে আড়াআড়ি শটে বল জালে পাঠিয়েছেন। বল গোললাইন ক্রস করার পরই বাংলাদেশের ডাগ আউট উৎসবে পরিণত হয়।
ম্যাচে সমতা আসার পর দুই দলই পুনরায় গোলের চেষ্টা করে। ইনজুরি সময়ের পাঁচ মিনিট বাংলাদেশ খানিকটা বিপদজ্জনক পরিস্থিতির মধ্যেই ছিল। ইনজুরির দ্বিতীয় মিনিটে আফগানদের গোলদাতা আমির শরীফ লাফিয়ে একটি ফ্রি হেড করেছিলেন। তার হেডে পোস্টে থাকলে বাংলাদেশকে শূন্য হাতেই মাঠ থেকে ফিরতে হতো। শেষ দুই মিনিট বেশ সতর্কতায় শেষ করেন জামালরা।
রেফারির শেষ বাঁশির সঙ্গে বাংলাদেশ শিবিরে খানিকটা উল্লাস। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ ১৮৪ ও আফগানিস্তানের অবস্থান ১৪৯। ৩৫ ধাপ এগিয়ে থাকা দলের বিরুদ্ধে এক পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। আফগানদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সর্বশেষ ড্রটি ২০১৫ সালে ঢাকায় এক প্রীতি ম্যাচে। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আগের লেগে বাংলাদেশ তাজিকিস্তানে গিয়ে ১-০ গোলে হেরেছিল আফগানদের বিরুদ্ধে।
প্রথমার্ধ গোলশূন্য ছিল। দ্বিতীয়ার্ধের তৃতীয় মিনিটেই পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। মিডফিল্ড থেকে বাড়ানো এক থ্রুতে ডান প্রান্তে বল পান আফগানদের ডেভিড আফগান নাজিম। আনমার্কড অবস্থায় ছিলেন তিনি। বক্সের বাইরে থেকে মাইনাস করেন আমির শরাফীকে। তার গার্ডে ছিলেন রিয়াদুল হাসান রাফি। তিনি বল স্পর্শ করার আগেই শরাফী প্লেসিং শটে বল জালে পাঠান।
গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো পুরোপুরি ডাইভ দিয়েও বলের নাগাল পাননি। ৬৫ মিনিটে আফগান কোচ আনৌশ বাংলাদেশের ক্লাব আবাহনীতে খেলা মাসিহ সাইগানীকে নামান। এই ডিফেন্ডারকে নামিয়ে তাদের রক্ষণ আরও মজবুত করেন। মাসিহকে নামিয়ে অবশ্য সোহেল-তপুকে প্রতিরোধ করা যায়নি। বাংলাদেশ ঠিকই গোল আদায় করে নিয়েছে।
ম্যাচের প্রথম ত্রিশ মিনিটে আফগানিস্তান বল পজেশনে এক পর্যায়ে ৭১ ভাগ ছিল। পরবর্তীতে অবশ্য বাংলাদেশ বল পজিশনে প্রতিপক্ষের কাছাকাছি আসে। আজ অভিষিক্ত হিসেবে তারিক কাজী প্রথমার্ধে ভালোই খেলেছেন। আফগানদের কয়েকটি আক্রমণ দুর্দান্তভাবে রুখেছেন। ট্যাকল করতে গিয়ে অবশ্য অভিষেকেই হলুদ কার্ড দেখেছেন ফিনল্যান্ড প্রবাসী এই ফুটবলার। আজকের ম্যাচে ইরানি রেফারিকে দুই দলের কয়েকজন ফুটবলারকেই হলুদ কার্ড দেখাতে হয়েছে কয়েকবার।
আফগানরা ফিটনেস ও শারীরিকভাবে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে থাকলেও টেকনিক্যালি খুব বেশি অগ্রসর নন। বিপজ্জনক জায়গায় কয়েক বার বল পেলেও আফগান ফরোয়ার্ডরা গোল আদায় করতে পারেননি। বাংলাদেশের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো অবশ্য দুই তিনটি দারুণ সেভ করেছেন।