কারও সাহায্য ছাড়া হাঁটতে পারেন না বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দলটির নেতারা বলছেন, দুর্নীতির মামলায় সাজা হলে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পায়ে হেঁটে পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত কারাগারে যায় খালেদা জিয়া।
কিন্তু ২০১৮ সালের ১৭ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে প্রথমবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম দাবি করেন, পরিত্যক্ত, জরাজীর্ণ শত বছরের পুরনো কারাগারে চিকিৎসা না পেয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন খালেদা জিয়া। তিনি সাহায্য ছাড়া হেঁটে আসতে পারছেন না। তাকে সাহায্য নিতে হচ্ছে, ধরতে হচ্ছে।
এরপর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি পেলে তাকে হুইল চেয়ারে করে হাসপাতাল থেকে নিচে নামিয়ে গাড়িতে তোলা হয়। এখনও তার একই অবস্থা। হুইল চেয়ার করে কারও সাহায্য নিয়ে তাকে চলাফেরা করতে হয়। গত ২৭ এপ্রিল আবারও তাকে হুইল চেয়ারে করে নিয়েই এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বিএনপির নেতারা ও খালেদা জিয়ার চিকিৎসকরা বলেছেন, কারাবন্দি থাকা অবস্থায় ২০১৮ সালের ১৭ জুন গুরুতর অসুস্থ খালেদা জিয়াকে বিশেষায়িত হাসপাতাল ইউনাইটেডে চিকিৎসার দেওয়ার দাবি জানায় বিএনপি। কিন্তু সরকার ২০১৮ সালের ৬ অক্টোবর হুইল চেয়ারে করে কারাগার থেকে খালেদা জিয়াকে নিয়ে এসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে দীর্ঘসময় সরকার তাকে চিকিৎসা হলেও স্বাস্থ্যের কোনো উন্নতি হয়নি।
চিকিৎসকরা জানান, এখন গত কয়েকদিন এভারকেয়ার হাসপাতালে ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধায়নে করোনা আক্রান্ত খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে। ধীরে-ধীরে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতিও হচ্ছে। কিন্তু তার দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার প্রয়োজন। ফলে, এখনি তিনি কারো সাহায্য ছাড়া চলাফেরা করতে পারবেন বিষয়টি এমন নয়। তাই হাসপাতালে তাকে চলাফেরায় সাহায্য করার জন্য সঙ্গে আছেন গৃহকর্মী ফাতেমা ও ব্যক্তিগত স্টাফ রুপা।
দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় খালেদা জিয়ার চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি আলিয়া মাদরাসার অস্থায়ী আদালত থেকে পা হেঁটে কারাগারে যান খালেদা জিয়া। কিন্তু কারাগারে তার সঠিক চিকিৎসা না হওয়ার পরে ওই বছরের জুন মাস থেকে তিনি হাঁটতে পারেন না। তখন আমরা বারবার সরকারের কাছে আবেদন করেছি তাকে বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা করার সুযোগ দেওয়ার জন্য। কিন্তু সরকার দেয়নি।
তিনি আরও বলেন, সরকার বিএসএমএমইউ হাসপাতালে তাকে দেড় বছর চিকিৎসা দিলেও তার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। বরং আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। যেটা আপনারা দেখেছেন তাকে গত বছরের ২৫ মার্চ হাসপাতাল থেকে হুইল চেয়ারে করে বাসায় নিয়ে যেতে হয়েছে। সেই অবস্থা গত ২৭ এপ্রিল হুইল চেয়ারে করে এনেই এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, এখনও ম্যাডাম হুইল চেয়ারে করে চলাফেরা করছেন। তবে, এখন তার চিকিৎসা শুরু হয়েছে। আমরা আশা করি, তিনি আবারও দেশবাসীর দোয়ায় সুস্থ হয়ে উঠবেন।