ভারতের গুজরাটের ভুরুচে একটি ওয়েলফেয়ার হাসপতালের করোনাভাইরাস ইউনিটে মধ্যরাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত অন্তত ১৮ জন রোগী মারা গেছেন। খবর এনডিটিভির।
শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই তা পুরো হাসপাতালে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে দ্রুত স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থালে গিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
এনটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, চারতলা বিশিষ্ট ওয়েলফেয়ার হাসপাতালটিতে অগ্নিকাণ্ডে ১২ জন করোনা রোগী ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যাওয়া ওইসব রোগীদের দেহাবশেষ বেড ও মেঝেতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতে দেখে গেছে। অন্য ছয়জনকে স্থানীয় অন্য একটি হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন। তাদেরও শরীরের অধিকাংশ দগ্ধ হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা হাসপাতাল থেকে অন্তত ৫০ জন করোনা রোগীকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। তাদের আশপাশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য আহমেদাবাদে নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে পুলিশ জানিয়েছে, আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ভেতরে প্রবেশ করে দেখা গেছে, দুর্ঘটনার পর রোগীদের সেখান থেকে সরিয়ে নিতে চিকিৎসক-নার্স ও তাদের স্বজনরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। গুরুতর অসুস্থ কয়েকজন রোগীকে বেড থেকে স্ট্রেচারে তোলার পরও বের করে আনার সুযোগ পাননি। স্ট্রেচারের সঙ্গে তাদের দগ্ধ দেহের অংশ লেপ্টে গেছে।
গুজরাট সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা রাজেন্দ্র সিংহ সুডাসামা জানিয়েছেন, ১২ জনের মৃত্যুর বিষয়টি ভোর সাড়ে ৬টায় আমরা নিশ্চিত হয়েছি। রোগীর স্বজনরা আরও যে ৬ জনের মৃত্যুর কথা জানাচ্ছেন, তারা হাসপাতালের ভেতরে মারা গেছেন নাকি তাদের উদ্ধার করে অন্য হাসপাতালে নেয়া হয় তা পরিষ্কার নয়। পুলিশ এ বিষয় খোঁজ-খবর নিচ্ছে।
তিনি আরও জানান, ভয়াবহ আগুনে পুড়ে যাওয়া করোনা ডেডিকেটেড ওই হাসপাতালটি আহমেদাবাদ থেকে ১৯০ কিলোমিটার দূরে ভুরুচ-জাম্বুসর মহাসড়কে অবস্থিত। হাসপাতালটি একটি ট্রাস্টের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত হয়। তবে অগ্নিকাণ্ডের প্রকৃত কারণ এখনও উদঘাটন করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বলেও জানিয়েছেন গুজরাট পুলিশের এই কর্মকর্তা।