করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেও আজ শুরু হচ্ছে কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স সমমান) পরীক্ষা। শুক্রবার (২ এপ্রিল) বিকেলে কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড ‘আল হাইআতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের’ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা মুহাম্মাদ ইসমাইল জানান, পরীক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। শনিবার থেকে সারাদেশে ২২২টি মারকাযে (পরীক্ষাকেন্দ্র) অভিন্ন প্রশ্নপত্রে দাওরায়ে হাদিস পরীক্ষা শুরু হচ্ছে।
কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড থেকে জানানো হয়েছে, গত ২৯ মার্চ করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব স্বাক্ষরিত এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের (১৬) ধারায় বলা হয়েছে : ‘সশরীরে উপস্থিত হতে হয় এমন যে কোনো ধরনের গণপরীক্ষার ক্ষেত্রে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।’ তাই দাওরায়ে হাদিস পরীক্ষার্থীকে এবং পরীক্ষার হলে দায়িত্ব পালনকারী সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য বিশেষভাবে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা মুহাম্মাদ ইসমাইল বলেন, পরীক্ষাটি অনেক আগেই ঘোষণা করা ছিল। এক দফায় রুটিন পরিবর্তন করা হয়েছে। সরকারের নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমরা পরীক্ষা নিচ্ছি।
এদিকে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে পরীক্ষা গ্রহণের ব্যাপক সমালোচনা শুরু করেছেন পরীক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, করোনার কারণে সরকার যেখানে মৌখিক পরীক্ষা স্থগিত করেছে, সেখানে দাওরায়ে হাদিসের মতো গণপরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। দেলওয়ার হোসেন নামে এক পরীক্ষার্থী বলেন, করোনার কারণে ভাবছিলাম পরীক্ষা হবে না। ঠিকমত পড়াশোনা করি নাই। এখন পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণায় যেন আসমান ভেঙে পড়েছে।
হেদায়েত আরমান নামে অন্য এক পরীক্ষার্থী বলেন, করোনার মধ্যে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। সরকার যদি মাঝখানে পরীক্ষা বাতিল বা বন্ধ করে দেয় তাহলে সেটার দায়ভার কার?। বোর্ডের উদ্দেশে এ শিক্ষার্থী বলেন, আপনারা এক প্রকারের জুলুম করলেন ছাত্রদের। মনে রাখবেন সবাই পরীক্ষা দিয়ে দেবে ঠিকই। কিন্তু আপনাদের জন্য যে ঘৃণা আর ক্ষোভ জমা হয়েছে সেটা কখনও শেষ হবার নয়।
এর আগে ১৫ মার্চ বোর্ডটির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে দাওরায়ে হাদিস পরীক্ষার পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করা হয়। রুটিন অনুযায়ী, ৩১ মার্চ পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হওয়ার কথা ছিল ৮ এপ্রিল। অর্থাৎ ৯ দিনে ১৩ বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল। শুক্রবার এবং কোনো কোনোদিন হওয়ার কথা ছিল দুটি বিষয়ের পরীক্ষা। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের সমালোচনার মুখে পরীক্ষা পেছানো হয়েছে। নতুন সূচি অনুযায়ী, পরীক্ষা ৩ এপ্রিল শনিবার থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে ১১ এপ্রিল রোববার।