তৈরি পোশাক, ওষুধ, পাট ও চামড়াজাত পণ্য রফতানিতে ডিউটি এবং কোটামুক্ত বাণিজ্য সুবিধা বেলারুশের কাছে চেয়েছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার ঢাকায় সফররত রেলারুশের শিল্প বিষয়ক উপমন্ত্রী ডিমিট্রি হ্যারিনটনচিকের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ দাবি তুলে ধরেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বেলারুশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। উভয় দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এ সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। উভয় দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল পারস্পরিক দেশ সফর করলে কোন কোন খাতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা যায়, তা নির্ধারণ করা সহজ হবে। এজন্য উভয় দেশের প্রতিনিধি নিয়ে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সহযোগিতা নিয়ে বিনিয়োগে ও বাণিজ্যের খাতগুলো নির্ধারণ করা সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুই দেশের বাণিজ্য ক্ষেত্রে বড় ব্যবধান রয়েছে। গত ২০১৯-২০ অর্থ বছরে বাংলাদেশ বেলারুশে বাংলাদেশ রফতানি করেছে চার দশমিক ৫৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য, একই সময়ে আমদানি করেছে ১৪৭ দশমিক ৩৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য এবং ওষুধ রফতানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিপুল সম্ভাবনা আছে, কিন্তু শুল্ক জটিলতার কারণে প্রত্যাশা অনুযায়ী রফতানি করা সম্ভব হচ্ছে না। বেলারুশ সরকার এসব পণ্য রফতানিতে ডিউটি ও কোটা ফ্রি বাণিজ্য সুবিধা দিলে বাংলাদেশের রফতানি অনেক বাড়বে।’
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার কাজ চলছে জানিয়ে টিপু মুনশি বলেন, ‘এসব ইকোনমিক জোনে পাওয়ার, আইসিটি, কৃষিভিত্তিক শিল্প খাতে বেলারুশ বিনিয়োগ করতে পারে। বাংলাদেশ সরকার বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আকর্ষণীয় সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। বেলারুশ এসব সুযোগ গ্রহণ করতে পারে। এছাড়া, দেশটি কৃষিক্ষেত্রে টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিলে বাংলাদেশ উপকৃত হবে।’
বেলারুশের শিল্প উপমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরপূর্তি অনুষ্ঠারে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি বেলারুশ কৃতজ্ঞ। এজন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বেলারুশ বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী। বাংলাদেশ বেলারুশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক অংশিদার। শুল্ক জটিলতা সমাধানে বেলারুশ সরকার কাজ করছে। আমরা বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ খাত, গ্রিন ট্রান্সপোর্ট সরবরাহ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। কৃষিভিত্তিক যন্ত্রপাতি উৎপাদন, প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন এবং কৃষি মেকানিকাল খাতে যৌথ উদ্যোগে কাজ করতে চায় বেলারুশ।’
এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. হাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।