দুঃসংবাদই শোনাল যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সরকারি বাসভবন হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, আফগানিস্তান ছাড়তে ইচ্ছুক সকল আফগান নাগরিককে দেশটি থেকে সরিয়ে আনা সম্ভব নয়। শুক্রবার (২৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
আফগানিস্তানে দু’দশক পর তালেবানের নিয়ন্ত্রণ ফিরে আসার পর থেকেই দেশটিতে অবস্থান করা বিদেশিদের সাথে হাজার হাজার আফগানও দেশ ছাড়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে তালেবানের শাসনে আতঙ্কিত আফগানরা যেকোনো মূল্যে দেশ ত্যাগ করতে চাইছেন।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি জানিয়েছেন, ‘দেশ ছাড়তে ইচ্ছুক লাখ লাখ আফগানদের মধ্যে থেকে এক এক করে সবাইকে দেশের বাইরে বের করে আনা কার্যত অসম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, আফগানিস্তানে আটকে থাকা মার্কিন নাগরিক ও যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের নিরাপদে বের করে আনার ব্যাপারে ওয়াশিংটন এখনও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এমনকি আগামী ৩১ আগস্টের পর আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পরও।
গত ১৪ আগস্ট থেকে এক লাখেরও বেশি মানুষ আফগানিস্তান ছেড়েছে। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। সপ্তাহ দুয়েক আগে সশস্ত্র তালেবান গোষ্ঠী আফগানিস্তানের শাসনক্ষমতা দখলের পরই আতঙ্কে বিদেশি নাগরিক ও সাধারণ আফগানদের মধ্যে দেশত্যাগের হিড়িক পড়ে।
এদিকে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের বিমানবন্দরে ভয়াবহ আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৯০ জনই বেসামরিক আফগান নাগরিক ও ১৩ জন মার্কিন সেনা।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চালানো ওই হামলায় নিহত বেসামরিক আফগানের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ৯০ জনে। এছাড়া নিহত কমপক্ষে আরও ১৩ মার্কিনিসহ হামলায় প্রাণ হারানো মানুষের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে।
কাবুল বিমানবন্দরে হওয়া ভয়াবহ ওই আত্মঘাতী বোমা হামলায় এখন পর্যন্ত ১৫০ জনেরও বেশি মানুষের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে ১৮ জন মার্কিন সেনা ও চাকরিজীবী রয়েছেন বলেও নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা। হামলার কয়েক ঘণ্টা পর দেওয়া এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস জানায়, ‘গত ১৪ আগস্ট থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এক লাখেরও বেশি মানুষকে যুক্তরাষ্ট্র আফগান ভূখণ্ড থেকে সরিয়ে এনেছে বা সরিয়ে আনার কাজে সহায়তা করেছে।’
এছাড়া বৃহস্পতিবার ১২ ঘণ্টায় কাবুল থেকে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার মানুষকে সরিয়ে আনা হয়েছে বলেও হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।