অস্কারের ৯৩তম আসরে ‘নোম্যাডল্যান্ড’ সিনেমার জন্য সেরা পরিচালক হিসেবে বিজয়ী হন এশিয়ার প্রথম নারী পরিচালক ক্লোয়ে ঝাও। এটি ২০২০ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পায়। ‘নোম্যাডল্যান্ড’ সিনেমায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন ফ্রান্সিস ম্যাকডোরম্যান্ড। এতে তাকে একজন বিধবা হিসেবে দেখা যায়। যিনি ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক সংকটের পর থেকে যাযাবর হিসেবে জীবনযাপন করেন। পুরো সিনেমাটি জেসিকা ব্রুডারের জীবনসংগ্রামের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে।
বিশ্বের দ্বিতীয় নারী পরিচালক হিসেবে অস্কার পুরস্কার পাওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করে ক্লোয়ে ঝাও বলেন, ‘আমি সবসময় আমার পরিচিত মানুষের মধ্য থেকে ভালো কিছু নেওয়ার চেষ্টা করেছি। সে কারণে বিশ্বের সব জায়গায় আমি গেছি। সেটি আমার ভক্তদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।’ ক্লোয়ে ঝাওয়ের প্রকৃত নাম বর্ন ঝাও টিং। এক সময় চীনের একটি স্টিল কোম্পানির কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেন। কিশোর বয়সে তিনি দেশ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্র পাড়ি জমান। সেখানে নিউইয়র্ক ও লস অ্যাঞ্জেলসে পড়াশুনা শেষ করে ব্রিটিশ বোর্ডিং স্কুলে ভর্তি হন। পরবর্তীতে সিনেমার শুটিংয়ের কাজে সেখানেই স্থায়ী হন।
ক্লোয়ে ঝাওয়ের প্রথম সিনেমা ‘সংস মাই ব্রাদার টট মি’ ২০১৬ সালের ২ মার্চ মুক্তি পায়। এর কাহিনি একজন কিশোরের স্বপ্নকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে। একটি একক পরিবারে দুই ভাই বোনের কিশোর বয়সে বেড়ে ওঠা, তাদের আকাঙ্ক্ষা, ব্যথা ও বেদনার গল্প বলা হয়েছে। ‘সংস মাই ব্রাদার টট মি’ সিনেমার দুই বছর পরে তার দ্বিতীয় সিনেমা ‘দ্য রাইডার’ মুক্তি পায়। এতে ব্ল্যাডিব্যাকবার্নের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় টিম জান্দ্রিয়াউকে।
‘সংস মাই ব্রাদার টট মি’ ও ‘দ্য রাইডার’ পরিচালনার সময় ক্লোয়ে ঝাও ছিলেন একদম অপরিচিত। কিন্তু এ সিনেমাগুলো মুক্তির পর জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। সম্প্রতি তিনি বলেন, ‘সমাজের কাছে আমার সাহায্যের প্রয়োজন হয়। সে কারণে আমি প্রায় সমাজের কাছে নিজেকে নিবেদন করি।’ চলতি বছরের ৪ নভেম্বর রাশিয়ায় মুক্তি পাবে ক্লোয়ে ঝাও পরিচালিত ‘ইটার্নালস’। তিনি আশা করছেন সিনেমাটি সফলতার মুখ দেখবে। অন্য দেশের তুলনায় চীনে এই নির্মাতার সমাদর একটু বেশিই। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম তাকে ‘চীনের গৌরব’ হিসেবে উপস্থাপন করেন।
ক্লোয়ে ঝাও কিশোরদের নিয়ে সিনেমা তৈরি করতে ভালোবাসেন। তিনি বলেন, ‘আমি কিশোরদের ভাবনাগুলোকে সিনেমায় নিয়ে আসি।’ উল্লেখ্য, ক্লোয়ে ঝাওয়ের আগে ২০০৮ সালে ‘দ্য হার্ট লকার’ সিনেমা জন্য বিশ্বের প্রথম নারী পরিচালক হিসেবে অস্কার পুরস্কার অর্জন করেন ক্যাথরিন বিগলো।