করোনায় বিপর্যস্ত শিক্ষার ক্ষতি পুরণ, শিক্ষার বিদ্যমান বৈষম্যের অবসান এবং শিক্ষাকে বিশ্বায়ন উপযোগী ও টেকসই ভিত্তি দেয়ার লক্ষ্যে শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের জন্য আসন্ন বাজেটে (২০২২-২৩ অর্থ বছরে) শিক্ষা খাতে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দের জন্য স্বাধীনতা শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশন আট দফা দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন। মানববন্ধনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও স্বাধীনতা শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশনের প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলম সাজু।
আট দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, ঐতিহাসিক মুজিব বর্ষের মধ্যেই শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের ঘোষণা, অ্যাফিলিয়েশনপ্রাপ্ত সকল স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি (স্বতন্ত্র এবতেদায়ি, অনার্সমাস্টার্সসহ) প্রতিষ্ঠানকে অতিদ্রুত এমপিওভুক্ত, শিক্ষা প্রশাসন এবং বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, মাউশিসহ বিভিন্ন অধিদপ্তর, শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতর থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধীদের অবিলম্বে প্রত্যাহার করা, আসন্ন ঈদের পূর্বেই পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, অন্তবর্তীকালীন সময়ে সরকারি অনুরূপ বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা প্রদান, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের জন্য আর্থিক প্রণোদনা কিংবা বিশেষ বৃত্তি বা অনুদানের ব্যবস্থা গ্রহণ।
এছাড়াও রয়েছে সব শিক্ষার্থীর জন্য বিনা-মুল্যে ডিভাইস, খাতা কলমসহ অন্যান্য শিক্ষা সামগ্রী প্রদান এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে সকল শিক্ষার্থীদের দুপুরে সরকারি উদ্যোগে খাবার সরবরাহ করা, শূন্য পদের বিপরীতে ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের বদলির ব্যবস্থা কার্যকর করা, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কর্মচারীদের দুর্দশা লাঘবে শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর বোর্ডের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ, ব্যবস্থাপনা কমিটিতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করা।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটিতে শিক্ষাবান্ধব ব্যক্তিদের অন্তর্ভূক্ত এবং স্কুল পর্যায়ে নুন্যতম ডিগ্রি পাশ ও কলেজ পর্যায়ে নূন্যতম মাষ্টার্স পাশ স্বচ্ছ ইমেজ সম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়োগদানের দাবি জানানো হয়। কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন প্রফেসর সাজিদুল ইসলাম, সাইদুর রহমান পান্না, অধ্যক্ষ মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজা, অধ্যক্ষ সলিম উল্লাহ সেলিম, উপাধ্যক্ষ হরিচাঁদ মন্ডল সুমন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, অধ্যক্ষ মো. মাহবুবুর রহমান, অধ্যক্ষ এ কে এম মোকসেদুর রহমান, শাহদাৎ হোসেন খন্দকার, এ কে এম ওবাইদুল্লাহ, কামরুজ্জামান মাসুদ, অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন মুকুল, অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল খোশনবিশ, মোঃ হারুনুর রশিদ, জয়নাল আবেদিন জেহাদি ও এম আরজু, শাহজাহান খান। আট দফা দাবিতে এদিন দেশের ৬৪ জেলায় একসঙ্গে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।