উদ্বোধনের বছর পার করছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ের পদ্মা সেতু। গত ২৬ জুন থেকে প্রথমবারের মতো সাধারণ মানুষের জন্য যানবাহন খুলে দেওয়ার পর ছয়মাসে পদ্মা সেতু থেকে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা টোল আদায় হয়েছে।
সেতু বিভাগের হিসেব মতে, গত ২৬ জুন থেকে গত ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সেতুতে পারাপার হয়েছে ২৭ লাখ ৩৭ হাজার ৫৯০টি যানবাহন। যা থেকে সেতুর জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তে মোট ৩৯৫ কোটি ২৮ লাখ ৫৬ হাজার ৬০০ টাকা টোল আদায় করা হয়েছে।
গত বছরের শেষ তিন দিনে আরও কয়েক কোটি টাকা আয় করেছে পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ।
গতবছরের ২৫ জুন অনাড়ম্বর আয়োজনের মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পরদিন সকাল ৬টা থেকে সেতুতে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
বাংলাদেশ সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে পদ্মা সেতু পারাপার হয়েছে ১৪ হাজার ৭১৮টি যানবাহন। আর প্রতিদিন গড়ে টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ১২ লাখ ৫১ হাজার ৯১৭ টাকা।
জানা গেছে, পদ্মা সেতু থেকে জুলাই মাসে সর্বোচ্চ ৭৮ কোটি ৫০ লাখ ১৯ হাজার ৪০০ টাকা টোল আদায় করা হয়েছে।
আর ডিসেম্বরের ২৮ তারিখ পর্যন্ত এই মাসে টোল আদায় হয়েছে ৬০ কোটি ১ লাখ ৪১ হাজার ৫৫০ টাকা। দৈনিক আয়ের গড় হিসেবে শেষ তিন দিনে আরও ৭ কোটির টাকার মতো টোল আদায় হয়েছে।
এদিকে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ রয়েছে। অনেক দাবিদাওয়াতেও এখনো দুই চাকার এই বাহন নিয়ে চলাচলের অনুমতি মেলেনি।
এক দিনের হিসাবে উদ্বোধনের পরদিন ২৬ জুন মোটরসাইকেলসহ পদ্মা সেতু দিয়ে সর্বোচ্চ ৫১ হাজার ৩১৬টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। মোটরসাইকেল ছাড়া ৮ জুলাই সর্বোচ্চ ৩১ হাজার ৭২৩টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এক দিনের হিসাবে সেদিন সর্বোচ্চ ৪ কোটি ১৯ লাখ ৩৯ হাজার ৬৫০ টাকা টোল আদায় হয়।
আর এক দিনের হিসাবে সবচেয়ে কম টোল আদায় হয়েছে ১০ ডিসেম্বর, ৮১ লাখ ১৭ হাজার ১৫০ টাকা।
উল্লেখ্য, পদ্মা সেতু নির্মাণে খরচ হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। কোন উপায়ে কত বছরে পদ্মা সেতুর ব্যয় উঠে আসতে পারে, সরকারিভাবে তার সুনির্দিষ্ট হিসাব পাওয়া যায় না। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার সমীক্ষা এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের নানা তথ্য-উপাত্ত আছে।
এই সেতু দিয়ে দেশের ২৩ জেলায় প্রতিদিন ২১ হাজার ৩০০ যানবাহন চলাচল করবে, যা ২০২৫ সাল নাগাদ বেড়ে দাঁড়াবে ৪১ হাজার ৬০০। এদের সবার থেকে টোল বাবদ যে আয় হবে, শুধু তা দিয়ে সেতুর ব্যয় উঠে আসতে সময় লাগবে সাড়ে ৯ বছর। যদিও প্রথম বছরে দৈনিক যানবাহন ধারণার থেকে বেশ কম চলাচল করেছে।