গত ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন ভোলার মো. হাসান। দীর্ঘ ছয় মাসেও সন্ধান পাওয়া যায়নি তার। অবশেষে খোঁজ মিলল নিখোঁজ সেই হাসানের। ঢাকা মেডিকেলের মর্গে তার মরদেহ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেলে কলেজ কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে হাসানের পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন হাসানের বাবা মো. মনির।
জানা গেছে, শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জুমার নামাজ শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল মসজিদে শহীদ হাসানের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে কফিন মিছিল হওয়ার কথা রয়েছে। আগামীকাল শনিবার সকাল ১০টায় গ্রামের বাড়িতে আরেকদফা জানাজা শেষে নিজ গ্রামে শহীদ হাসানকে সমাহিত করা হবে।
গুলিবিদ্ধ হয়ে মো. হাসান নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় গত ১৭ আগস্ট ‘মুই বিচার চাই না, সরকার যেন খালি মোর পোলার লাশের খোঁজডা দেয়’ এবং গত ১৪ ডিসেম্বর ‘আজও বাবা-মা জানেন না ছেলে বেঁচে আছে না মারা গেছে’ শিরোনামে দুটি সংবাদ প্রকাশিত হয় ঢাকা পোস্টে।
শহীদ মো. হাসান ভোলা সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাচিয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর বেপারি বাড়ির ভাড়াটিয়া দিনমজুর মো. মনির ও গোলেনূর বেগম দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান ও সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তান ছিলেন।
এর আগে গত ১২ জানুয়ারি দুপুরে হাসানের পরিবার ঢাকা মেডিকেলের মর্গে থাকা অজ্ঞাত কয়েকটি মরদেহের মধ্য থেকে প্রাথমিকভাবে হাসানের মরদেহ শনাক্ত করে তার পরিবার। পরে ১৩ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী থানার মাধ্যমে আদালতের নির্দেশে মালিবাগের সিআইডি অফিসে হাসানের বাবা-মা ডিএনএ নমুনা দেন এবং হাসানের ডিএনএ নমুনার সঙ্গে তাদের ডিএনএ নমুনা মেলে।
নিহত হাসানের বাবা মো. মনির ঢাকা পোস্টের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আমার ছেলে নিখোঁজ হওয়ার খবরটি গুরুত্বসহ সর্বপ্রথম প্রকাশ হয় ঢাকা পোস্টে। দীর্ঘ ৬ মাস ৮ দিনের মাথায় অনেক চেষ্টার পর আমার ছেলের মরদেহ খুঁজে পেয়েছি। আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে, আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।
তিনি আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা আমাকে বলেছেন, শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা শেষে গণহত্যার বিচারের দাবিতে হাসানের মরদেহ নিয়ে কাফিন মিছিল হবে। এরপর হাসানের মরদেহ ভোলায় গ্রামের বাড়িতে এনে দাফন করব।
হাসানের মরদেহ শনাক্তের বিষয়ে জানতে চাইলে ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আবু শাহাদাত মো. হাচনাইন পারভেজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ বিষয়ে এখনও কোনো তথ্য পাইনি।