দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, আগামী ৫০ বছরে অর্থাৎ ২০৭১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ভূমিকম্প সহনীয় রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। জাপানের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে ।
বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে ‘ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবেলায় সরকার অপেক্ষা ভবন মালিকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ’ শীর্ষক ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
জাপানকে ভূমিকম্প সহনীয় দেশ উল্লেখ করে ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, জাপানে ১০ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ৭০-৮০ তলার ভবনগুলো দুলে কিন্তু কোনো ভবন ধসে পড়ে না। অথচ বাংলাদেশে লাখ লাখ ভবন আছে কিন্তু শত শত প্রকৌশলী নেই।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক বাড়ি বাড়ি প্রকৌশলীদের পাঠানো সম্ভব নয়। ভবন মালিকরাই প্রকৌশলীদের আমন্ত্রণ করবেন, তোমরা আসো, আমার ভবনটি পরীক্ষা করো। ভূমিকম্প সহনীয় করার জন্য যা করা প্রয়োজন তাই করো। ভবন মালিক ও সরকারকে মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। তাহলেই আমরা ভূমিকম্প প্রতিরোধ করতে পারব।
দেশকে ভূমিকম্প সহনীয় করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারতের মেঘালয় থেকে ৮ দশমিক ৬ মাত্রায় ভূমিকম্প হতে পারে। ১৮৯৭ সালে সর্বশেষ ভূমিকম্প হয়েছিল। প্রায় ১২৭ বছর আগে ভূমিকম্প হয়েছিল। সেই ফল্টের পরবর্তী কম্পন আসতে পারে ২০০ বছর, ৩০০ বছর অথবা ৫০০ বছর পরে। যদি আমরা ২০০ বছর ধরি, তাহলে আমাদের হাতে সময় আছে দেশটাকে ভূমিকম্প সহনীয় করার।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০১৫ নেপালে ভূমিকম্প দেখেছি। এরপরে হাইতি, আর্জেন্টিনা, সিরিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার ভূমিকম্প দেখেছি। সব জায়গায় কিন্তু হতাহত হয়েছে। আমাদের সামনে সবচেয়ে বড় উদাহরণ হচ্ছে জাপান। ২০১৯ সালে গ্লোবাল প্ল্যাটফর্ম ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন আন্তর্জাতিক সেমিনারে ভূমিকম্প নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে জাপানের জাইকার পক্ষ থেকে ভিডিও দেখানো হয়, সে ভিডিওতে দেখা গেল ১০ মাত্রার ভূমিকম্প হচ্ছে। ৭০-৮০ তলা ভবন সেগুলো দুলছে কিন্তু কোনো ভবন ধসে পড়েনি। এতে তারা আমাদের বুঝিয়েছে জাপান একটি ভূমিকম্প সহনীয় দেশ।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ ভূমিকম্পের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় ১০ দফা সুপারিশ উপস্থাপন করেন।
ভূমিকম্পের ঝুঁকি নিরসন নিয়ে আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং সেন্ট যোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বির্তাকিকরা অংশগ্রহণ করে।