তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ২০২৩ সালে মারামারির সময় হাবিরের হাতে কোপ দিয়েছিল পাভেল। ওই ঘটনায় মামলা হলে জেলে যায় পাভেল। এরপর আবার বেরিয়ে আসেন। সেই দ্বন্দ্বের প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হন হাবিব। খুঁজতে থাকেন সুযোগ। একপর্যায়ে কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে পাভেলকে ডেকে নেন পল্লবীতে। সেখানে নেওয়ার পর একের পর এক কোপ দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে মরদেহ পুকুরে ফেলে পালিয়ে যায়।
পাভেল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচজন গ্রেফতার হলে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দেয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. হাবিব (২৮), মো. হানিফ (২৬), মো. আনিছ (২২), সোহান ও সাবদ্দিন। এদের মধ্যে হাবিব হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা। তিনি বাড্ডা সুবাস্তু টাওয়ারে একটি চাকরি করেন।
পুলিশ জানায়, পাভেলের সঙ্গে বাড্ডার হাবিবের পূর্ব শত্রুতা ছিল। সেই শত্রুতায় পাভেল হাবিবের হাতে কুপিয়েছিল। এর বদলা নিতে পাভেলকে পল্লবীতে ডাকা হয়। এরপর কয়েকজন মিলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ৪৫ বার কোপ দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে পুকুরে ফেলে দেয় হত্যাকারীরা৷ এরপর সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
পল্লবী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম জানান, পাভেল ও হাবিবের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। এর জেরে গত বছর তাদের মধ্যে মারামারি হয়। তখন পাভেল হাবিবের হাতে কোপ দিয়ে আহত করে।
ওই ঘটনায় ২০২৩ সালে ২৮ ডিসেম্বর বাড্ডা থানায় মামলা হয়। পাভেল গ্রেফতার হওয়ার পর আবার জামিনে বেরিয়ে আসেন। এরপর হাবিব প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকেন। পরিকল্পনা করেন পাভেলকে কোপানোর। সেজন্য বাড্ডায় থাকা বন্ধু তানজীবের সহায়তায় পাভেলকে পল্লবীর স্বপ্ননগর আবাসিক এলাকার পেছনে ডেকে নিয়ে যান হাবিব।
পুলিশ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম আরও জানান, হাবিবসহ অন্যরা উপস্থিত হলে চাকু আর ছুরি দিয়ে ৪৫ বার আঘাত করা করা হয় পাভেলকে। এরপর তাকে ফেলে দেওয়া হয় গণপূর্তের পুকুরে। সেখানে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে পাভেলের মৃত্যু হয়।
পুলিশ বলছে, পাভেলও মাদক সেবন ও কারবারে জড়িত ছিলেন। যারা গ্রেফতার হয়েছেন তাদের সবার নামে একাধিক মামলা হয়েছে।
গত রোববার রাতে পল্লবীর একটি পুকুর থেকে পাভেলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পরদিন সোমবার নিহতের মা পারুল বাদী হয়ে পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় হাবিব (২৮), হানিফ (২৬), আনিছ (২২), রায়হান নানু (২২), মিলন (৩৭) ও জনি (২৬) ছাড়া আরও ৫/৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
পাভেলের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলায়। তার বাবার নাম শায়েস্তা খান। পাভেল থাকতেন বাড্ডার পাঁচতলাবাজার এলাকায়। তিনি বাসচালকের সহকারী হিসেবে কাজ করতেন।