নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সাবেক স্পিকার আব্দুল মালেক উকিল হল ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রায় সাড়ে চারশ শিক্ষার্থীর এই আবাসিক হলে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করেছে হল শাখা ছাত্রলীগ। হলটিতে প্রতি সাড়ে চারজন শিক্ষার্থীর মধ্যে এখন একজন করে ছাত্রলীগের নেতা রয়েছে।
গত ২০ মে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নাঈম রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান শুভ আব্দুল মালেক উকিল হল ছাত্রলীগের এ পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেন। এর আগে চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি নাজমুল হাসান লিশুকে সভাপতি ও মো. আব্দুল্লাহ বায়োজীদ তপুকে সাধারণ সম্পাদক করে হল শাখা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
১০১ জনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে ২৩ জন, যুগ্ম সম্পাদক পদে ১১ জন, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ১১ জন, সহ-সম্পাদক পদে ৩ জন, প্রচার ও উপ-প্রচার সম্পাদক পদে ৪ জন, দফতর ও উপ-দফতর সম্পাদক পদে ৪ জনসহ অন্যান্য পদে ২ জন করে রাখা হয়েছে।
১০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠনের বিষয়ে নোবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নাঈম রহমান বলেন, যারা নিয়মিত, সক্রিয়, মুজিব আদর্শ ধারণ করে এবং ক্লিন ইমেজের কর্মী ছিল তাদেরকে এসব কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়েছে। সাধারণত হলগুলোতে ৯১, ১০১, ১২১ বা ১৫১ সদস্যের কমিটি দেওয়া হয়। আমাদের হলটি বেশি বড় না হওয়ায় আমরা ১০১ সদস্য গঠনের অনুমোদন দিয়েছি।
তিনি বলেন, হল শাখাগুলো উপজেলা সমমর্যাদা সম্পন্ন। উপজেলা শাখাগুলো ৬১ সদস্যের হয় কারণ ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড ভিত্তিক বিভিন্ন ইউনিটে কমিটি গঠন করা হয়। এখানে হল যেহেতু ছোট এবং ফ্লোরে ফ্লোরে কমিটি দেওয়ার সুযোগ নেই তাই গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মালেক হল ছাত্রলীগের কমিটি ১০১ সদস্য দিয়ে পূর্ণাঙ্গ করা হয়।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান শুভ বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকদিন ধরে একটা সাংগঠনিক জট চলছিল। অনেক শিক্ষার্থী দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগের সাথে কাজ করে এসেছিল। তাদেরকে একটা সাংগঠনিক পরিচয় দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করে কমিটিতে রাখা হয়েছে। এমনকি যাদের ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হয়েছে তাদেরকেও এ কমিটিতে রাখা হয়েছে। কারণ ছাত্রলীগের পরিচয় তাদের জন্য অনেক বড় একটা প্রাপ্তি।
আব্দুল মালেক উকিল হল ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হাসান লিশু বলেন, দীর্ঘ দিনের রাজনৈতিক অচলায়তনের পর আমরা প্রতিষ্ঠাকালীন মালেক উকিল হল ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত। ছাত্ররাজনীতির প্রধান লক্ষ্যই ছিল সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের অধিকার ও তাদের প্রয়োজন ও দাবি নিয়ে কাজ করার। কমিটির হওয়ার পর আমরা হল প্রভোস্টের সঙ্গে কথা বলে হলের প্রতি ফ্লোরে পানির পিউরিফায়ার, হলের গেস্ট রুম ও স্পোর্টস রুম সংস্করণসহ হল প্রভোস্টের কাছে আমরা লিখিতভাবে হলের খাবারের মান উন্নয়ন ও খাবারের মান ঠিক রাখার জন্য অনুরোধ করেছি।
তিনি আরও বলেন, এই কমিটিতে আমরা তাদেরকে প্রাধান্য দিয়েছি যারা দীর্ঘ দিন মালেক হল ছাত্রলীগের জন্য কাজ করেছেন, মুজিবীয় আদর্শকে ধারণ করে ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে জননেত্রীর হাতকে শক্তিশালী করার ইচ্ছে ও প্রয়াস আছে। আমরা অত্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে ত্যাগী ও যোগ্যদের মূল্যায়ন করার চেষ্টা করেছি। এজন্য নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ পদপ্রত্যাশীদের জীবন বৃত্তান্ত জমা নিয়ে যাচাই-বাছাই করেছেন। তাছাড়া মালেক হল ছাত্রলীগের একাধিক বার মতবিনিময় সভায় সাধারণ কর্মীদের থেকে মতামত নেওয়া হয়েছে কাদেরকে মূল্যায়ন করা হবে। নোবিপ্রবি ছাত্রলীগের সব থেকে আলোচিত ও সক্রিয় ইউনিট মালেক হল ছাত্রলীগ। এখানে রাজনৈতিক কর্মীর সবাইকে মূল্যায়ন করার উদ্দেশ্য এত বড় কমিটি করা হয়েছে।
নতুন কমিটির পরিকল্পনা হিসেবে আব্দুল মালেক উকিল হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ বায়োজিদ তপু বলেন, হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের বৈধতা নিশ্চায়ন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ন্যায্য মূল্যে খাবার, দ্রুতগতির ইন্টারনেট, ড্রেনেজ সংস্কার, রিডিংরুম আধুনিকায়ণ, স্পোর্টস রুমে সরঞ্জাম বৃদ্ধি, স্যানিটারি সংস্কার, প্রতিটি ফ্লোরে খাবার পানির ব্যবস্থাসহ শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট এসব বিষয়ে কাজ করার পরিকল্পনা আছে। আমরা ইতোমধ্যেই বিভিন্ন বিষয়ে প্রভোস্ট মহোদয়ের সঙ্গে আলাপ করেছি।
দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যদের বিষয়ে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে যারা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের জন্য পরিশ্রম করেছে। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আদায়ের আন্দোলনে যারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এবং পারিবারিকভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত তাদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।