সাভারে জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার হামলায় হোসেন আলী (৪০) নিহতের অভিযোগে আসামিদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে থানায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। এসময় বাবার খুনিদের বিচারের দাবিতে তিন কিলোমিটার হেঁটে থানায় আসে দুই শিশু।
সোমবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সাভার মডেল থানার প্রধান গেটে শত শত নারী-পুরুষসহ নিহতের স্বজনরা অবস্থান নেন। এর আগে গত শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) ভোররাতে সাভারের এনাম মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হোসেন আলী মারা যান।
নিহত হোসেন আলী সাভার রাজফুলবাড়িয়ার রামচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত শফিতুল্লার ছেলে। তিনি পেশায় একজন ফার্মেসি ব্যবসায়ী ছিলেন।
অভিযুক্তরা হলেন- ঢাকা জেলা উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সাফু এবং তার সহযোগী আনোয়ার হোসেন, মো. আব্বাস বাদল, কামরুল, নাঈম, আনিস ও মুন্নাসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জন। তারা সবাই রাজফুলবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা।
অবস্থান কর্মসূচি থেকে তানিয়া আক্তার নামের এক নারী বলেন, হোসেন আলীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। হোসেন আলীর চারটি সন্তানকে এখন কে দেখবে, কে খাওয়াবে। আমরা হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।
নিহতের মা মরিয়ম বলেন, আমি কিছুই চাই না। আমার সন্তানকে যারা হত্যা করেছে তারা এখনও গ্রেপ্তার হয়নি। আসামিদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচার করা হোক। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন, আমার ছেলেকে যারা হত্যা করেছে তাদের যেন ফাঁসি হয়।
এর আগে নিহতের দুই শিশু বাবার হত্যাকারীদের ফাঁসি চেয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে সড়কে দাঁড়িয়ে পড়ে। তাদের পেছনে ছিল শত শত এলাকাবাসী। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের ফুলবাড়িয়া থেকে হেঁটে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে সাভার মডেল থানায় এসে অবস্থান নেয় তারা।
এ ব্যাপারে সাভার মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমরা যথাসময়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। কিন্তু আসামিরা হাইকোর্ট থেকে জামিনে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে হোসেন আলী ও তার ভাই খোরশেদ রিকশায় রাজফুলবাড়িয়া এলাকায় নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। এসময় রামচন্দ্রপুর এলাকায় পৌঁছালে অভিযুক্তরা তাদের গতিরোধ করে ছুরি, রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) ভোররাতে মারা যান হোসেন আলী।